কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
২০০৯ সাল। বছরটা তাঁর জন্য একটা মাইলস্টোন হয়ে আছে। বামেদের সঙ্গে টানা লড়াইয়ের পর ওই বছরই তিনি বিধানসভার উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন। প্রসঙ্গত,উত্তরবঙ্গ থেকে তৃণমূলের টিকিটে তিনিই প্রথম বিধানসভায় গিয়েছিলেন। তারপর থেকে আর তাঁকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১১, ২০১৬ বিধানসভা ভোটেও তাঁর জয়ের ধারা অব্যাহত ছিল। এবারও তিনি রাজগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী। দীর্ঘদিন ধরে গ্রামীণ রাজনীতির সুবাদে এলাকায় মাটির মানুষ, কাজের মানুষ বলেই পরিচিত।
কিন্তু এসব কিছুকে উহ্য রেখেই আগামী দিনে রাজগঞ্জ বিধানসভার জন্য তাঁর দল এবং তিনি কিভাবে কাজ করতে চান, তাই মানুষের সামনে তুলে ধরছেন খগেশ্বরবাবু। রাজ্য সরকারের কাজের তালিকা লিফলেট আকারে বিলি করছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও সেই লিফলেট ছড়িয়ে গিয়েছে। বিধায়ক হিসেবে তিনি কী কী কাজ করেছেন, সেই নিয়েও মিনিট পাঁচেকের একটি শর্ট ফিল্ম করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। এবার প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই তিনি সকাল সকাল প্রচারে বেরিয়ে বেশি রাতে বাড়ি ফিরছেন। কখনও হেঁটে, কখনও গাড়িতে, আবার কখনও টোটোতে করে গ্রাম্য পথ চষে বেড়াচ্ছেন ৭৪ বছর বয়সী খগেশ্বরবাবু।
২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে তিনি ৮৯ হাজার ৭৮৫ ভোট পান। সিপিএম পায় ৭৫ হাজার ১০৮ ভোট। বিজেপি পায় ১৭ হাজার ৮১১ ভোট। কিন্তু ২০১৯ লোকসভা ভোটের সময় দেখা যায় সার্বিকভাবে জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির ফল ভালো। বিজেপিকে ধাক্কা খেতে হয় এই রাজগঞ্জে। উত্তরবঙ্গে বিজেপির প্রবল হাওয়া সত্ত্বেও জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের অধীন রাজগঞ্জ বিধানসভায় তৃণমূল এগিয়ে ছিল ৪৪০০ ভোটে। তবে এসব আত্মতুষ্টি শিকেয় তুলে বুধবার সাতসকালে বেরিয়ে যান বিন্নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। সেখানে আদর্শপল্লী, পাগলুপাড়া, ফারাবাড়িতে যান। পিচ রাস্তা থেকে কংক্রিটের রাস্তা বেয়ে আদর্শপল্লীতে ঢুকতেই সকলে হাসিমুখে অভিনন্দন জানান প্রার্থীকে। এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা প্রার্থীকে গলায় গাঁদা ফুলের মালা পরিয়ে দেন। প্রার্থী আসছে জেনে মামনি রায়, দয়ামনি রায়দের মতো স্থানীয় মহিলারা অপেক্ষা করছিলেন রাস্তায়। প্রার্থী আসতেই স্থানীয় জনতা সমস্বরে বলে ওঠে, ‘ দাদা, খেলা হবে’। খগেশ্বরবাবুও হাসিমুখেই পাল্টা বলেন, অবশ্যই খেলা হবে।
বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলার ফাঁকে আদর্শপল্লীর চায়ের দোকানে বসে ডিম-পাউরুটি টোস্ট ও চা-বিস্কুট খান। সেখান থেকে ফের শুরু হয় হাঁটা। পাড়ায় ঢুকতেই মহিলারা প্রার্থীকে দেখে হাসি মুখে প্রণাম করেন। বলেন আপনার সহযোগীতায় বিধবাভাতা পাচ্ছি। আমার নাতিকে স্কুল থেকে একটি সাইকেল দিয়েছে। বিধায়কও পাল্টা হাত জোড় করেন। ঘন্টাখানেকের এই প্রচার পর্বের মধ্যেই মাথার উপর সূর্য ততক্ষনে উত্তাপ বাড়িয়েছে। এরপরেই প্রচার বন্ধ রেখে আধ ঘণ্টার জন্য বাড়িতে যান প্রার্থী। স্নান করে শাক, পটল ভাজা, কুচো মাছের চচ্চড়ি সহযোগে ভাত খেয়ে ফের দ্বিতীয় দফায় প্রচার শুরু। এবার গন্তব্যস্থল ফারাবাড়ি। যাওয়ার আগে বললেন, এবারের ভোট বাংলাকে বাঁচানোর লড়াই। সবাইকেই একজোট হতে হবে।