নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ভোটের মধ্যেই এমবিবিএস! এই বিষয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। ৩ মার্চ এক নির্দেশনামা জারি করে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, এমবিবিএস ফার্স্ট প্রফেশনাল পরীক্ষার থিয়োরি অংশের কোনও পরিবর্তন হবে না। আর মৌখিক ও প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা শুরু হবে ২৪ মার্চ এবং শেষ করতে হবে ১৯ এপ্রিলের মধ্যে। রাজ্যে ভোটের দিনক্ষণকে মাথায় রেখেই এই বিজ্ঞপ্তি, জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়। যদিও কীভাবে দিনক্ষণ বজায় রেখেই এই বিজ্ঞপ্তি জারি হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, এমবিবিএস-এর ফার্স্ট প্রফেশনাল-এর মৌখিক ও প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার মধ্যেই রয়েছে ২৭ মার্চ, ১ এপ্রিল, ৬ এপ্রিল, ১০ এপ্রিল এবং ১৭ এপ্রিল—আট দফা নির্বাচনের মধ্যের এই পাঁচ দফা ভোটাধিকার প্রয়োগের দিন। সেই দিনগুলিতেই পরীক্ষা থাকলে কীভাবে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ছাত্রছাত্রীরা? পরীক্ষা দেবেন, নাকি ভোটদান করবেন? দূর-দূরান্তে নিজেদের ভোটদান কেন্দ্র থাকলে কীভাবেই বা ভোট দেবেন পরীক্ষকরা? তাছাড়া, বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে শুধুমাত্র এলাকার স্থানীয় ছাত্রছাত্রীরাই পড়াশোনা করেন না। গোটা রাজ্য থেকে ছেলেমেয়েরা পড়তে আসেন। বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র শিক্ষক চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ভোটের মধ্যে পরীক্ষা হয় না। কারণ, ভোটদানের অধিকার সবার। এই নির্দেশ নিয়ে ক্ষুব্ধ তাঁরা।
শুক্রবার কামারহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডাঃ রঘুনাথ মিশ্র বলেন, নিশ্চয়ই স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় দিনক্ষণ পাল্টাবে বা কিছু একটা ব্যবস্থা নেবে। ভোটের মধ্যে তো আর পরীক্ষা হয় না! বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডাঃ পার্থপ্রতিম প্রধান বলেন, থিয়োরি পরীক্ষার দিন আমরা পাল্টাতে পারি না। তবে মৌখিক ও প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার ক্ষেত্রে উদ্ভূত পরিস্থিতি দেখে ঠিক করা হয়েছে, যেসব ছাত্রছাত্রীর পরীক্ষার দিনই ভোট পড়েছে, তাঁরা লিখিত আবেদনপত্র জমা দিলে অন্য দিনে পরীক্ষা দিতে পারবেন। ডাঃ প্রধানের আক্ষেপ, বহুবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এমবিবিএস পরীক্ষাগুলি অনেক আগে নিয়ে নিতে বলা হয়েছিল। তারা কর্ণপাত করেনি। করলে এই সমস্যা হতো না। স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যনিবাহী উপাচার্য ডাঃ কাকলি বসু রায় এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।