রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
আগে গ্রামে ভোট মানে ছিল একটা উৎসব। নির্বাচনকে ঘিরে মুখে মুখে ছড়া তৈরি হতো। তৈরি হতো তরজা গান। তার প্রতিফলন ঘটত দেওয়াল চিত্রে। যে দেওয়ালে গত বছর ‘ঘাসফুল’ ফুটেছিল, সেই দেওয়ালেই হয়ত এবার ফুটছে ‘পদ্ম’, আবার পদ্মের দেওয়াল হয়ত দখল করেছে হাত-কাস্তে। এই দেওয়াল দখল নিয়েই বিভিন্ন সময়ে গণ্ডগোল, হাতাহাতি হয়েছে যুযুধান দলগুলির মধ্যে। গণ্ডগোল হয়ত এবারও হবে, তবে দেওয়াল লিখনের সেই ঐতিহ্য কালের নিয়মে অনেকটাই জৌলুস হারিয়েছে। রং-তুলির শিল্পীরা আগের মতো ডাক পান না। অনেক জায়গাতেই দেওয়াল-ক্যানভাসের দখল নিয়েছে ফ্লেক্স। তার উপর সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার যে মাত্রা পেয়েছে, তাতে কার্যত ব্যাকফুটে চলে যাচ্ছে দেওয়াল লিখন।
তবে দেওয়ালে ভোটের ভাষাই বলে দেয় নির্বাচন আসন্ন। পাড়ায় পাড়ায় রং-বেরঙের দেওয়ালে জ্বলজ্বল করে দল, প্রতীক, প্রার্থীর নাম। কোমর বেঁধে নেমে পড়েন বিভিন্ন দলের কর্মীরা। সুন্দরবন এলাকা এর ব্যতিক্রম নয়। এখানে বেশ কিছু মাটির দেওয়ালে চুনের পোচ পড়েছে। চলছে ভোট-প্রচারে তুলির টান। ভোট সংক্রান্ত ছড়া, শায়েরি, ব্যঙ্গ চিত্র ধীরে ধীরে জায়গা করে নিচ্ছে দেওয়ালগুলিতে। শহর-শহরতলিতে ফ্লেক্সের রমরমা থাকলেও গ্রামীণ এলাকায় অবশ্য ভোটের প্রচার দেওয়াল নির্ভর। শিল্পীরা মুখিয়ে রয়েছেন কখন ডাক আসবে, তাঁদের দিকে। দলমত নির্বিশেষে কাজ করেন তাঁরা। কোনওদিন এক দলের প্রতীক আঁকলে, পরের দিন হয়ত ডাক আসে অন্য দল থেকে। স্বপন রায়। দেওয়াল লেখায় পারদর্শী এই শিল্পী কথায় কথায় বললেন, সময়ের সঙ্গে অনেক কিছুই বদলেছে। আগে ভোটের কয়েক মাস আগে থেকেই টাকা দিয়ে আমাদের বুকিং করা হতো, যতগুলি দেওয়াল, সেই অনুপাতে টাকা। এখন বরাত কমে গিয়েছে। পতাকা, ব্যানার, ফ্লেক্স টাঙিয়ে অনেক দলই প্রচারের কাজ সারতে চাইছে। আগ্রহ কমেছে দেওয়াল-প্রচারে। কোনও কোনও পরিবার আবার এখন দেওয়ালে লিখতে দিতে চায় না। কাজ কমে আসায় রং-তুলি ছেড়ে শিল্পীদের অনেকেই চলে যাচ্ছেন অন্য পেশায়। হাসনাবাদ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তথা তৃণমূলের ব্লক সভাপতি এস্কান্দার গাজিকে তুলি হাতে দেখা গেল দেওয়ালে রাজনৈতিক স্লোগান লিখতে। তাঁর বক্তব্য, মা-মাটি-মানুষের সরকার শিল্প-সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে সব রকম প্রয়াস নিয়েছে। তাই ফ্লেক্স নয়, আমরা দেওয়াল লেখার ব্যাপারে শিল্পীদের উপরই ভরসা রেখেছি। - ফাইল চিত্র