পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
আদালত সূত্রের খবর, কলকাতা পুরসভার অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৮ সালে পোস্তা থানায় এক বেআইনি নির্মাণের মামলা দায়ের করা হয়। পুরসভার অভিযোগ ছিল বেআইনি নির্মাণের সঙ্গে সেখানকার একটা অংশ বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। কোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মামলায় চার্জশিট জমা পড়লে সেই নথিতে একরাশ অসঙ্গতির সঙ্গে তদন্তকারী অফিসারের কারসাজির বিষয়টিও নজরে আসে বিচারকের। এরপরই ক্ষুব্ধ বিচারক এই নির্দেশ দেন। আদালতে পেশ করা চার্জশিটে কী ধরনের কারসাজি ছিল? পুলিস চার্জশিটে প্রথমে একজনকে অভিযুক্ত করেছিল। কিন্তু পরে সেখানে কাটাকুটি করে আর একজনকে অভিযুক্ত করে। কিন্তু ওই নথির প্রতিলিপি এবং কেস ডায়েরিতে একজনকেই অভিযুক্ত হিসেবে রাখা হয়। এমনকী, চার্জশিটে প্রথমে চারজনকে সাক্ষী করা হয়েছিল। পরে দেখা যায় পুলিস সুকৌশলে আর একজনকে সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করেছে।
প্রবীণ আইনজীবী নবকুমার ঘোষ বলেন, আইনের বিধানই আছে, চার্জশিট পেশ করার পরেও যদি বাড়তি কোনও তথ্য তদন্তকারী অফিসার পেয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে কোর্টের অনুমতি নিয়ে ফের সাপ্লিমেন্টারি পেশ করা যেতেই পারে। কিন্তু তাতে তো কোনও সমস্যা থাকার কথা নয়। কিন্তু এক্ষেত্রে পুলিস কেন সে পথে হাঁটল না, সেটাই আশ্চর্য।
এই চার্জশিটের অসঙ্গতির বিষয়টি নিয়ে আদালত উদ্বেগ প্রকাশ করে বলে, কোনও নির্মাণ যদি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে সেই ভবনে সরকারি অগ্নিনিরোধক ‘ছাড়পত্র’ আছে কি না, কিংবা সেখানে কী ধরনের অগ্নি প্রতিরোধক যন্ত্রপাতি রাখা হয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ উল্লেখ করতে হয়। কিন্তু এখানে তার কোনও উল্লেখ ছিল না। এই মামলায় অভিযুক্তকে কেন গ্রেপ্তার করা হল না, বা কেন তাকে আইনি নোটিস দিয়ে থানায় ডাকা হল না, তা নিয়েও ছিল না কোনও সন্তোষজনক ব্যাখা।
অন্য ক্রুটির মধ্যে ছিল কলকাতা পুরসভার অভিযোগকারী ইঞ্জিনিয়ারকে এফআইআরের কপির নথি না দেওয়া। তদন্ত শেষ হওয়ার পরেও দু’বছর একমাস পর কোর্টে চার্জশিট পেশ করা। ওই বেআইনি নির্মাণের মালিকানা কার? তার উল্লেখ না করা। ছিল না লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্ল্যাম্বার সাক্ষী এবং তাঁর বক্তব্য নথিভুক্ত করা।
বিচারক মন্তব্য করেছেন, এই ধরনের মামলায় কী কী ইমারতি দ্রব্য ব্যবহৃত হয়েছে এবং সেসবের গুণগত মানই বা কী, চার্জশিটে তার উল্লেখ থাকাটা একান্ত জরুরি। কিন্তু এই নথিতে তার কিছুই ছিল না। বিচারক বলেছেন, মামলার যাবতীয় অগ্রগতির বিষয়টি নথিভুক্ত থাকে তদন্তকারী পুলিস অফিসারের কেস ডায়েরিতে, যা কোর্টে পেশ করতে হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গিয়েছে, তদন্তকারী পুলিস অফিসার কেস ডায়েরি আগাছোলাভাবে মনিটর করেছেন। সব মিলিয়ে এই মামলার চার্জশিটে গাফিলতির বিষয়টি প্রকট হয়ে উঠেছে।