কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
সমীরবাবু কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের অধীনস্থ সল্টলেকের এস এন বোস ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর বেসিক সায়েন্সেসের সিনিয়র অধ্যাপক। এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশুরোগ বিভাগের অধ্যাপক ও নিওনেটোলজি ইউনিটের প্রধান ডাঃ অসীমকুমার মল্লিক। গত তিন বছর ধরে তাঁরা যন্ত্রটি নিয়ে গবেষণা করছিলেন। বাচ্চাদের জন্ডিস বা নিওনেটাল জন্ডিস অত্যন্ত বিপজ্জনক অসুখ। বহুক্ষেত্রে এই রোগ শিশুমৃত্যুর কারণ। কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যু না হলেও বাকি জীবনটা জড়বুদ্ধি হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। এক্ষেত্রে এই যন্ত্রের মাধ্যমে নিমেষে বাচ্চার বিলিরুবিনের মাত্রা জানা সম্ভব। সেইমতো ফটোথেরাপি ও রক্ত বদল করে দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টাও করা যাবে।
ডঃ পাল জানিয়েছেন, যন্ত্রটির দাম কমবেশি দু’লক্ষ টাকা। এটি থেকে মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইটের মতো একটি আলো বাচ্চার নখে গিয়ে পড়বে। সেই আলোই বুঝে নেবে ওর রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা। বাণিজ্যিকভাবে এই যন্ত্রের মাধ্যমে এক-একটি শিশুর বিলিরুবিন পরীক্ষা করতে খরচ পড়বে মাত্র ২৫ পয়সা! অসীমবাবু জানিয়েছেন, স্বাভাবিক প্রসবের ক্ষেত্রে সাধারণভাবে ৪৮ ঘণ্টা পর সরকারি হাসপাতাল থেকে মা ও শিশুকে ছুটি দেওয়া হয়। কিন্তু বহু বাচ্চারই জন্ডিস ধরা পড়ে ৪৮ ঘণ্টা পরে। সেক্ষেত্রে কবে রক্তপরীক্ষার রিপোর্ট আসবে, সেই অপেক্ষায় না থেকে এই যন্ত্রের মাধ্যমে খুব সহজেই তার শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা জানা সম্ভব হবে। মনে রাখতে হবে, সদ্যোজাতদের ৬০ শতাংশের ফিজিওলজিক্যাল জন্ডিস হয়। সিংহভাগ ক্ষেত্রেই বিলিরুবিনের মাত্রা স্বাভাবিক হলেও, পাঁচ শতাংশ ক্ষেত্রে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে।
সূত্রের খবর, ২০১৭ সালে প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল। অপটিক্যাল ফাইবার ও ফ্ল্যাশ লাইট (মোবাইলের তুলনায় ২০ গুণ কম জোরালো) প্রযুক্তির ব্যবহার করে যন্ত্রটির উদ্ভাবন করেন ডঃ পাল। ২০১৭-’১৯ পর্যন্ত এন আর এস মেডিক্যাল কলেজে সেটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলেছে। প্রচলিত পদ্ধতির (সংগৃহীত রক্ত থেকে) পাশাপাশি নতুন যন্ত্রের মাধ্যমে সদ্যোজাতদের বিলিরুবিন পরীক্ষা করা হয়। তিন হাজারের বেশি শিশুর ক্ষেত্রে দুই পদ্ধতিতে প্রাপ্ত বিলিরুবিনের মান তুলনা করে দেখা যায়, রিপোর্ট সমতুল। ট্রায়ালে সাফল্য মেলার পর প্রযুক্তিটি বাণিজ্যিকভাবে বাস্তবায়িত করতে টেকনোলজি ট্রান্সফার হয়। যার ফল ‘অজেয়’। ডঃ পাল বলেন, ‘ইনস্টিটিউট অধিকর্তা অধ্যাপক এস কে রায়ের সহযোগিতা না পেলে এত বড় প্রকল্প বাস্তবায়িত হতো না। একই প্রযুক্তি দিয়ে আরও কী কী করা সম্ভব, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’