গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
নাম না করে বস্তুত রাহুল গান্ধীর সমালোচনাতেই জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘কয়েকজন ভ্যাকসিন নিয়েও রাজনীতি করছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। কেউ যদি এই নিয়েও রাজনীতি করতে চায়, কারও পক্ষে কি ঠেকানো সম্ভব? তারা রাজনীতি করুক। কিন্তু আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয় যে, কবে আসবে ভ্যাকসিন।’ কিন্তু তাঁর দলই তো রাজনীতি করছে বাংলায়। যে অভিযোগ বারবার তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। করোনা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহল থেকে নানা ব্যর্থতার অভিযোগ করা হচ্ছে। মূলত গেরুয়া শিবিরই এহেন অভিযোগের স্রষ্টা। এমনকী, এদিন যে রাজ্যগুলির (মহারাষ্ট্র, দিল্লি, রাজস্থান, গুজরাত, কর্ণাটক, উত্তরপ্রদেশ, ছত্তিশগড়) মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মোদি, তাদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা অপেক্ষাকৃত ভালো। ভার্চুয়ালি প্রধানমন্ত্রীর মুখোমুখি হয়ে পরিসংখ্যান দিয়ে সেকথা তুলেও ধরেছেন মমতা।
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দুর্গাপুজো, কালীপুজো-দীপাবলি এবং ছটপুজোর মতো ধর্মীয় উৎসব পালন করেছে রাজ্য। লক্ষ লক্ষ মানুষ তাতে অংশ নিয়েছেন। চালু হয়েছে শহর ও শহরতলির লোকাল ট্রেন। লক্ষ লক্ষ মানুষ তাতে যাতায়াত করছেন। তা সত্ত্বেও অন্য রাজ্যের তুলনায় এখানে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার কমেছে। বেড়েছে সুস্থতার হার। তারপরেই ভ্যাকসিন নিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন তিনি। কোনও আশার বাণী যে এখনই মিলবে না, এই শঙ্কা থেকেই সোমবার খাতড়ার সভায় সুর চড়িয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
জবাবে ভ্যাকসিন স্টোরেজ, হ্যান্ডলিং এবং ম্যানেজমেন্ট নিয়ে এখন থেকেই দ্রুত প্রস্তুতি এবং রোডম্যাপ তৈরির কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও জানান, ‘আমাদের অগ্রাধিকার একটাই। সকল ভারতবাসী যেন ভ্যাকসিন পায়। সেই লক্ষ্যে রাজ্যগুলিকে স্টোরেজ সহ নানাবিধ ব্যবস্থা এখন থেকেই নিতে হবে।’
কী সেই ব্যবস্থা? মোদির মতে, এখন থেকেই ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্টের সাপোর্ট স্টাফ নিয়োগ করা হোক। এছাড়া ভ্যাকসিন স্টোরেজ ও সাপ্লাইতে স্বেচ্ছাসেবক প্রয়োজন। তাদেরও তৈরি রাখতে হবে। তাঁর স্পষ্ট কথা, ভ্যাকসিন নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য একসঙ্গে কাজ করবে। সহমত মুখ্যমন্ত্রীও। তার জন্য প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী এবং কোল্ড চেইন সহ যাবতীয় পরিকাঠামো তৈরি করে রেখেছে বাংলা।
পাশাপাশি পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় সাহায্য এবং বকেয়া অর্থ নিয়েও বৈঠকে দরবার করেছেন মমতা। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পর্বে এখনও পর্যন্ত রাজ্য কোষাগার থেকে ৪ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। কেন্দ্রের তরফে এখনও পর্যন্ত মিলেছে মাত্র ১৯৩ কোটি। জিএসটির ক্ষতিপূরণ বাবদ বাংলার বকেয়া ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এদিনের বৈঠকে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব থ্যাকারে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, মহামারীর এই পর্বে রাজনৈতিক খেলা এবং রেষারেষি থেকে জনস্বার্থেই সবার বিরত থাকা উচিত। তাঁকে সমর্থন জানান মমতা।
অন্যদিকে, মোদি এদিন বুঝিয়ে দিয়েছেন, প্রথম দফায় ভ্যাকসিন পাবে স্বাস্থ্যকর্মীরা। দ্বিতীয় পর্যায়ে পুলিস ও সাফাই কর্মী। তৃতীয় দফায় পাবে পঞ্চাশোর্ধ্ব ভারতবাসী। আর চতুর্থ দফায় দেওয়া হবে কো-মরবিড নাগরিকদের। এরপর আসবে সকলের জন্য ভ্যাকসিন। মোদি প্রত্যেক রাজ্যকে অনুরোধ করেছেন, যতদিন না ভ্যাকসিন আসছে, ততদিন একটাই লক্ষ্যে অবিচল থাকতে হবে। টেস্টিং, টেস্টিং এবং টেস্টিং। অর্থাৎ যত পরীক্ষা বাড়বে, ততই সুরক্ষা বাড়বে। -নিজস্ব চিত্র