দেবাঞ্জন দাস, বাঁকুড়া: একদিকে সাম্প্রতিক কৃষি আইন প্রবর্তন এবং অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন শিথিলের মতো বিজেপির ভ্রান্ত নীতি। অন্যদিকে রাজ্যবাসীর স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর উন্নয়ন পরিকল্পনার বাস্তবায়ন। কাজে-কর্মের এই সমুদ্রসম ফারাককে হাতিয়ার করেই আজ, বুধবার রাজনীতির ময়দানে নামছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লক্ষ্য একটাই—উন্নয়ন অস্ত্রে গেরুয়া শিবিরে প্রত্যাঘাত। করোনা পর্বের মাঝেই আজ বাঁকুড়া শহরের উপকণ্ঠে সুনুকপাহাড়ীতে প্রথম রাজনৈতিক সভা তাঁর। ওই মঞ্চ থেকে রাজনৈতিক আক্রমণের পাখির চোখ কী হতে চলেছে, তার আভাস সোমবার খাতড়া এবং মঙ্গলবার বাঁকুড়া শহরের প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে দিয়ে রেখেছেন নেত্রী। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, কেন্দ্রের ভ্রান্ত নীতির জন্যই ভুগছে মানুষ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাঁকুড়ার আদিবাসী পরিবারে মধ্যাহ্নভোজ নিয়ে কটাক্ষ থেকে শুরু করে আলু, পেঁয়াজের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি, কৃষি আইন এমনকী ভ্যাকসিন সংস্থানের ক্ষেত্রেও বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন তিনি। 
গত লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহলের এই জেলার দু’টি লোকসভা আসনেই জোড়াফুলের বদলে পদ্মফুল ফুটেছিল। পায়ের নীচে মাটি কিছুটা শক্ত হতেই বিজেপির হুঙ্কার শুরু হয়েছে জেলা জুড়ে। লোকসভা নির্বাচন ইস্তক আগোছালো সংগঠন গুছিয়ে নেওয়ার কাজও সমানতালে চালিয়ে গিয়েছে তৃণমূল শিবির। কর্মী-সমর্থকদের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে আরও চাঙ্গা করে তুলতে দলের সুপ্রিমোর বার্তা ‘ভোকাল টনিকের’ কাজ করবে বলে মনে করছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি শ্যামল সাঁতরা। তাঁর কথায়, দেড় লক্ষ মানুষ আসবেন সভায়। 
এদিন বাঁকুড়ার প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে অমিত শাহ প্রসঙ্গ ফের উত্থাপন করে মমতার বাক্যবাণ—ঘর ভাড়া নিয়ে খেয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। চুর্তুডিহির যে আদিবাসী ব্যক্তি বিভীষণ হাঁসদার বাড়িতে খেতে বসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তাঁর মেয়ে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী রচনা জটিল ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত। অভিযোগ, গেরুয়া শিবির পরিবারের পাশে দাঁড়ায়নি। এদিন জেলাশাসক সহ অন্য আধিকারিকদের মমতার নির্দেশ, ওই ছাত্রীর চিকিৎসার ভার যেমন নেওয়া হয়েছে, তেমনই লাগাতার তা চালিয়ে যেতে হবে। বৈঠকে তিনি শোনেন, বাঁকুড়া স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রেলের জমি থেকে বস্তি উচ্ছেদ করার তোড়জোড় চলছে। তাতে বিজেপি শিবিরের মদত রয়েছে, এমন অভিযোগও করা হয় মুখ্যমন্ত্রীকে। সব শুনে তাঁর প্রতিক্রিয়া, এভাবে কাউকে উচ্ছেদ করা যায় না! আপনারা আন্দোলন করুন।