বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
অনলাইন ক্লাসের বাস্তব অবস্থা ঠিক কী, তা জানতে রাজ্যের ন’’টি জেলাকে বেছে নেওয়া হয়। সেই তালিকায় কলকাতার পাশাপাশি ছিল দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া, হুগলি ও নদীয়া। এই জেলাগুলির মোট ১১০০ পড়ুয়াকে বেছে নেওয়া হয়, যাঁরা স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করছেন। সমীক্ষা ও গবেষণার কাজে এগিয়ে আসেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় থাকা কবি সুকান্ত মহাবিদ্যালয়ের তিন শিক্ষক। তাঁরা হলেন অর্থনীতির অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ডঃ রূপম মুখোপাধ্যায়, সমাজবিদ্যার শিক্ষক কৃষ্ণেন্দু মণ্ডল এবং শিক্ষাতত্ব বা এডুকেশনের শিক্ষক অর্পিতা দে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন কমার্স, ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সে।
সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ক্লাসরুমে পড়াশোনার চেয়ে অনলাইন ক্লাস আরও বেশি কার্যকর, এমন মতামত দিয়েছেন ৭৫ শতাংশ ছাত্রছাত্রী। যেহেতু অনলাইন ক্লাস যে কোনও জায়গায় বসেই করা যায়, তাই এই ক্লাস করা তুলনামূলকভাবে সুবিধার, এমন মতামত উঠে এসেছে ৭১ শতাংশ পড়ুয়ার কাছ থেকে। তবে ৭৩ শতাংশের দাবি, এই ব্যাপারে সবথেকে বেশি দক্ষ হতে হবে শিক্ষকদের, যা বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে না। আরও একটি উল্লেখযোগ্য তথ্য উঠে এসেছে এই সমীক্ষায়। পড়ুয়াদের অন্তত ৬৩ শতাংশ মনে করছেন, অনলাইন ক্লাসের ক্ষেত্রে বাড়ির লোক অথবা বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণা থাকা ভীষণ রকম দরকার। তাঁরা যদি বিষয়টিকে সাপোর্ট না করেন বা পাশে না দাঁড়ান, তাহলে অনলাইন ক্লাস করতে অনেকেরই অসুবিধা হবে।
অনলাইন ক্লাস নিয়ে আগ্রহ যতই থাকুক না কেন, সমস্যা রয়েছে প্রচুর, বলছে সমীক্ষাটি। এর মধ্যে প্রথম সমস্যা হল ইন্টারনেট সংযোগ। ৬৩ শতাংশের কাছে তা বড় সমস্যা। ইন্টারনেট ডেটা কেনা অনেকের ক্ষেত্রেই বেশ অসুবিধাজনক, বলছে সমীক্ষা। তিন নম্বর অসুবিধা হিসেবে উঠে এসেছে অ্যান্ড্রয়েড ফোন বা কম্পিউটার না থাকা। প্রতিদিন কলেজে গিয়ে ক্লাস করা যাঁদের অভ্যাস, তাঁদের অনেকেই বলছেন, বাড়িতে বসে অনলাইনে ক্লাস করতে তাঁরা অনেক সময়ই আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। যে সাতটি মূল সমস্যাকে চিহ্নিত করেছে সমীক্ষাটি, তাতে সাত নম্বরে রয়েছে সাইবার সিকিউরিটি সংক্রান্ত সমস্যা।
তাহলে উপায়? সমীক্ষাকারী শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, সবচেয়ে আগে দরকার অনলাইন ক্লাস ক্লাসের জন্য শিক্ষকদের যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। পাশাপাশি ইন্টারনেটের যে সমস্যা রয়েছে, তা কাটাতে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। গোটা দেশ যেখানে অনলাইন ক্লাসে পড়াশোনা করছে, তখন ধরে নেওয়া যায় এখন থেকে ক্লাসরুমের পাশাপাশি অনলাইন ব্যবস্থাও একইসঙ্গে জায়গা করে নেবে। সেক্ষেত্রে সস্তায় ইন্টারনেট দেওয়া বা গরিবদের হাতে মোবাইল ফোন তুলে দেওয়ার কাজটিও সরকারকেই করতে হবে।