বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
অমর্ত্য সেন বা হালফিলে অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়দের নোবেলপ্রাপ্তিও রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের অর্থনীতি পড়ায় সেভাবে উৎসাহিত করতে পারছে না। কারণ, দশম শ্রেণী পর্যন্ত অর্থনীতি পড়ার কোনও সুযোগ নেই। তাই শিক্ষকের প্রয়োজনও নেই। এর ফলেই কমছে চাহিদা। নিউ আলিপুর কলেজের অধ্যক্ষ জয়দীপ ষড়ঙ্গী বলেন, ‘এসএসসিতে চাকরি নেই যখন, অর্থনীতি পড়ে কী হবে? হয়তো এমনই ধারণা করছে ছাত্রছাত্রীরা। এটা ঠিক, অর্থনীতি এমন একটি বিষয়, যা নিয়ে উচ্চতর শিক্ষায় না গেলে দারুণ কেরিয়ার তৈরি বেশ কঠিন। যারা অর্থনীতি পড়তে ভালোবাসে তারা হয়তো দিল্লি স্কুল অব ইকোনমিক্স বা এই ধরনের নামজাদা প্রতিষ্ঠানগুলির দিকে ঝাঁপাবে। আমাদের কলেজে অর্থনীতির পাশাপাশি ফিলোজফি এবং সংস্কৃতের চাহিদা এ বছর একেবারেই নেই। যদিও বিগত কয়েক বছরের সংস্কৃতের চাহিদা কিছুটা হলেও বাড়ছিল। তবে এবার অন্যান্য বিষয় যেখানে রেকর্ড ভর্তি, সেখানে অর্থনীতিতে ১৫ জন, সংস্কৃতে দু’জন এবং ফিলোজফিতে ১২ জন ভর্তি হয়েছে।’
একই সুর যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজকুমার রায়ের গলাতেও। তাঁর কলেজে ইকনমিক্স অনার্সের ১৯টি আসন রয়েছে। মাত্র ন’জন ভর্তি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে গভীর ভাবনাচিন্তার প্রয়োজন আছে। এবছর ফাইনাল সেমেস্টারে একজন ইকোনমিক্স অনার্সের পড়ুয়া। অথচ অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষক রয়েছেন তিনজন। এটা তো মানবসম্পদের ক্ষতি। ক্লাস্টার কলেজ করে তাঁদের অন্যত্র ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করা যায়।’ ইলেকট্রনিক্সের মতো বিষয়েও হাল খুবই খারাপ। মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজে ভর্তি কমিটির সর্বোচ্চ দায়িত্বে থাকা শিক্ষক কৃষ্ণ দাস বলেন, অন্যান্য বিষয়গুলিতে যেখানে রেকর্ড ভর্তি হয়েছে, সেখানে এই ধরনের বিষয়গুলিতে সাড়া বেশ কম। বারাসতের পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র কলেজেও অভিন্ন চিত্র। করোনার আবহে মাইক্রোবায়োলজির মতো বিষয়ে আবেদন জমা পড়েছে দেড় হাজারেরও বেশি। সেখানে অর্থনীতিতে আবেদন দুশোরও কম। ইংরেজিতে আবেদনও প্রায় বারোশো। এ ছাড়াও বাংলা, ইতিহাস, ভূগোলের মতো মাধ্যমিকস্তরে পাঠ্য বিষয়গুলিতে ৪০০ থেকে ৮০০-র মধ্যে আবেদনের সংখ্যা ঘোরাফেরা করছে।