বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
জলঙ্গির মধুবোনা গ্রামেই মইনুল ও ইয়াকুবের বাড়ি। দু’জনের বাড়ির দূরত্ব বড়জোর ২০০ মিটার। মধুবোনার পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে পদ্মার শাখা। নদী পেরলেই বাংলাদেশ। একেবারে নির্জন। গ্রামের প্রাকৃতিক শোভাও অপরূপ। সাবালক হওয়ার আগেই এই গ্রামের অধিকাংশ যুবক কেরলে পাড়ি দেয়। মইনুল সেখানে রয়েছে ১৫ বছর। ইয়াকুবও গিয়েছে বছর পাঁচেক আগে। তাদের দু’জনের সম্পর্ক প্রথম থেকেই ভালো।
মধুবোনা গ্রামে ঢুকতেই ঘিরে ধরলেন মহিলারা। ভিড় জমালেন বয়স্করাও। কিন্তু অল্পবয়সিদের খুব একটা কাছে ঘেঁষতে দেখা গেল না। প্রতিবেশীরা বলেন, মইনুল, ইয়াকুব কেউই তেমন পড়াশোনা জানে না। তাদের জীবনযাত্রাও ছিল সাধারণ মানের। আগে ট্রেনে যাতায়াত করলেও ইদানীং প্লেনেই বেশি যেত মইনুল। তবে পারিবারিক অবস্থা খুব ভালো নয়। কারণ তার এক বোনের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। তিন লক্ষ টাকা যৌতুক চেয়েছিল পাত্রপক্ষ। সেই টাকার ব্যবস্থা করতে না পারায় বোনের বিয়ে ভেস্তে যায়। দীর্ঘদিন কাজ না থাকায় সংসারেও অনটন চলছিল। এই পরিস্থিতিতেও সে কেরল যাওয়ার জন্য প্লেনের টিকিটই কেটেছিল। ইয়াকুবের একতলা বাড়ি। কয়েকবছর আগেই বাড়িটি পাকা হয়েছে। তবে, শুধু ইয়াকুবের নয়, গ্রামের অধিকাংশ বাড়িই পাকা।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, ইয়াকুব ও মইনুল আগে দু’টি আলাদা রেস্টুরেন্টে কাজ করত। তারপরে মইনুলই তার মালিককে বলে ইয়াকুবকে তার রেস্টুরেন্টে কাজে লাগিয়েছিল। দু’জনই পরোটা তৈরি করত। সম্ভবত সংগঠন নিয়ে আলোচনার জন্যই তারা একই জায়গায় কাজ নিয়েছিল। মইনুল লকডাউনের সময় বাড়ি ফিরলেও ইয়াকুব কেরলেই থেকে গিয়েছিল। তবে, তাদের দু’জনের মধ্যে দিনে অন্তত চার থেকে পাঁচবার হোয়াটস অ্যাপ কলে কথা হতো। কয়েক মাস পর ইয়াকুবের বিমানেই বাড়ি ফেরার কথা ছিল। লকডাউনের সময় টাকার টানাটানি সত্ত্বেও মাইনুল প্লেনের টিকিট কেটেছিল। এখন কেরলে যাওয়ার জন্য প্রতিদিনই ডোমকল, জলঙ্গি থেকে বাস ছাড়া হচ্ছে। আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ করলেই অনায়াসে সেখানে পোঁছনো যায়। তা সত্ত্বেও তিনগুণ টাকা খরচ করে সে প্লেনের টিকিট কেটেছিল। গোয়েন্দারা মনে করছেন, এয়ারপোর্টের বিস্তারিত তথ্য জোগাড় করার উদ্দেশ্যেই বিমানে যাওয়ার টিকিট কেটেছিল মইনুল। মইনুলের এক আত্মীয় অবশ্য দাবি করেছেন, ওর মায়ের কাছে টাকা জমানো ছিল। তিনিই টিকিট কাটার জন্য টাকা দিয়েছিলেন। তবে ট্রেন বা বাস ছেড়ে কেন প্লেনে যেতে চেয়েছিল, সেটা বলতে পারব না।