পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
রাজ্যের প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে এই ধরনের ‘গবেষণাগার’ তৈরির পরামর্শ দিয়েছে পঞ্চায়েত দপ্তর। সেটা না পারলে অন্তত প্রতিটি ব্লকে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে হবে। ‘পাইলট প্রকল্প’ হিসেবে অনুসরণ করা যেতে পারে উত্তর ২৪ পরগনার পাতুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতকে। ইতিমধ্যেই তারা একটি অত্যাধুনিক ‘গবেষণাগার’ তৈরি করে কাজ শুরু করেছে। আক্ষরিক অর্থে বলা হচ্ছে, ‘কোয়ালিটি টেস্টিং ল্যাবরেটরি’। ‘স্বশক্তিকরণ কর্মসূচি-২’র অধীনে সেটি গড়ে উঠেছে। যা শুধু রাজ্য নয়, দেশেও সম্ভবত প্রথম। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত এই পাতুলিয়া। অর্থাৎ অর্থমন্ত্রীর কেন্দ্র থেকে পঞ্চায়েতের কাজকর্মে দুর্নীতিরোধে এই অভিনব পন্থা দিশা দেখাবে গোটা রাজ্যকে।
পঞ্চায়েত অফিস সংলগ্ন খাস জমিতে গড়ে ওঠা ওই ‘গবেষণাগারে’ উন্নয়নমূলক কাজের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কীভাবে হচ্ছে পরীক্ষা? গ্রাম পঞ্চায়েতের ‘স্বশক্তিকরণ কর্মসূচি’র জেলা সঞ্চালক (উত্তর ২৪ পরগনা) সন্দীপ সরকার বলেছেন, ‘পঞ্চায়েত এলাকায় মূলত বিল্ডিং নির্মাণ, রাস্তাঘাট তৈরি, নিকাশি নালা কিংবা পানীয় জল সরবরাহের মতো প্রকল্পের কাজ বেশি হয়। প্রতিটি কাজের গুণগতমান যাচাইয়ে বেশ কিছু মেশিনপত্র রয়েছে ল্যাবে। যেমন, রাস্তা পরীক্ষার জন্য রয়েছে কিউব টেস্ট মেশিন এবং রিবাউন্ড হ্যামার। এই মেশিনকে কাজে লাগিয়ে অথবা রাস্তায় হাতুড়ি মেরে বোঝা যাবে রাস্তা কতটা মজবুত ও টেকসই। সঠিক দূরত্ব অনুযায়ী রাস্তার কাজ হয়েছে কি না, তা জানতে ব্যবহার করা হচ্ছে রোডো মিটার। ফিতে ধরে দূরত্ব মাপ করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয়। রোডো মিটারে একেবারে নিখুঁত তথ্য পাওয়া সম্ভব। সেতু কিংবা কোনও নির্মীয়মাণ বিল্ডিংয়ের বহনক্ষমতা পরীক্ষার জন্য রয়েছে লোড ক্যাপাসিটি পরিমাপক যন্ত্র। এছাড়াও নির্মাণকাজে সঠিক পরিমাণে সিমেন্ট-বালি-স্টোনচিপস মেশানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে বিশেষ ধরনের এক মেশিন। নিকাশিনালার ঢাল ঠিকঠাক তৈরির ক্ষেত্রে ল্যাবে রাখা হয়েছে অটো লেভেলার যন্ত্র। ল্যাব পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন একজন টেকনিশিয়ান। সব মিলিয়ে কোয়ালিটি টেস্টিং ল্যাবরেটরি গড়তে খরচ পড়ে প্রায় দু’লক্ষ টাকা।’
উন্নয়নমূলক কাজে পঞ্চায়েতগুলি রাজ্য ও কেন্দ্র মিলিয়ে বছরে দেড় থেকে দু’কোটি টাকা করে পায়। ওই টাকাতেই বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করে পঞ্চায়েত। কাজের গুণগতমান বজায় রাখতে ল্যাব গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন পাতুলিয়া পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক ধীমান পাল। সম্প্রতি স্বশক্তিকরণ কর্মসূচিতে জেলা সঞ্চালকদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন পঞ্চায়েত দপ্তরের আধিকারিকরা। সেখানেই প্রতিটি ব্লকে এই ধরনের গবেষণাগার গড়ে তোলা পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। সন্দীপবাবুও মনে করেন, কাজের গুণগতমানের সঙ্গে আপস না করার প্রশ্নে এই ল্যাব যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। পঞ্চায়েতগুলি সামান্য উদ্যোগী হলে খুব সহজেই উন্নয়নমূলক কাজগুলি পরীক্ষা করতে পারে।