কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
দেশের যে সমস্ত সংস্থা বিদেশে গয়না বিক্রি করে, তাদের মূল সংগঠনের নাম জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিল। এখানকার কর্তাদের বক্তব্য, লকডাউনে গয়না তৈরির কাজ পুরোপুরি বন্ধ ছিল। আনলক পর্বে জুন মাস থেকে শুরু হলেও ১০০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করার অনুমতি দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। বলা হয়েছিল, ২৫ শতাংশ কর্মচারী নিয়ে কাজ করতে হবে। কাউন্সিলের কর্তারা বলছেন, করোনা সংক্রমণের আতঙ্ক কাটিয়ে ধীরে ধীরে ব্যবসায় ফিরছে বিশ্ব। হীরের গয়নার চাহিদাও বাড়ছে। বরাত আসছে ভারতে। কিন্তু সরকারি নিয়ম-নীতি মানতে গিয়ে জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
কাউন্সিলের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, মূল কাজটি উতরে দেন পশ্চিমবঙ্গের কারিগররা। কিন্তু কাজের জায়গায় তাঁদের সংখ্যা এখন খুব কম। বেশিরভাগ বাঙালি কারিগর কাজে যোগ দেননি। এদিকে সেপ্টেম্বর মাস থেকে উৎসবের মরশুম শুরু হয়ে যায়। ডিসেম্বর পর্যন্ত সর্বোচ্চ চাহিদা থাকে গয়নার। যদি এই সময়কে কাজে লাগানো না যায়, তাহলে গোটা বছরের ব্যবসা মার খাবে। এমনই আশঙ্কা হীরের গয়না রপ্তানিকারীদের।
কাউন্সিলের অন্যতম কর্তা শৈলেশ সাঙ্গানির কথায়, ‘আমরা কর্মচারীদের বেশি মজুরির প্রস্তাব দিচ্ছি। যাঁরা অত্যন্ত দক্ষ শ্রমিক, তাঁদের প্লেনের টিকিট পাঠানোর ব্যবস্থা করছি। কিন্তু অনেকেই পরিবারকে ছেড়ে এত তাড়াতাড়ি কাজে যোগ দিতে রাজি হচ্ছেন না। সংক্রমণের ভয় পাচ্ছেন অনেকে। সবথেকে বেশি বিপাকে পড়েছে মুম্বই।’ কাউন্সিলের পূর্বাঞ্চলীয় চেয়ারম্যান প্রকাশ পিঞ্চা বলেন, ‘সব খারাপেরও একটা ভালো দিক আছে। বাংলার দক্ষ কারিগররা যদি এই সুযোগে নিজেদের মজুরি বাড়িয়ে নিতে পারেন, তাহলে তাঁদের পক্ষে সত্যিই ভালো। তাঁরা কাজে যোগ দিলে যেমন উপার্জন বাড়বে, তেমনই রপ্তানিও অনেকটা স্থিতিশীল হবে।’
ভারত থেকে যে পরিমাণ হীরের গয়না রপ্তানি হয়, তার অন্যতম ক্রেতা হংকং, আমেরিকা এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। গত আর্থিক বছরে, অর্থাৎ ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত হংকংয়ে ৯.৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের গয়না রপ্তানি হয়েছে। মোট রপ্তানির ২৭ শতাংশ গিয়েছে এখানেই। সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে রপ্তানি হয়েছে ৯.৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের গয়না। ৯.১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ভারতীয় গয়না বিক্রি হয়েছে আমেরিকায়। এরপরে রয়েছে বেলজিয়াম ও ইজরায়েল।
তারপর লকডাউন ও করোনা সংক্রমণের চক্করে কতটা ক্ষতি হল ব্যবসার? কাউন্সিলের হিসেব বলছে, গত এপ্রিল থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত ভারত ৩ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকার সোনার গয়না রপ্তানি করেছে। গত বছর ঠিক একই সময়ে রপ্তানির অঙ্ক ছিল ১৩ হাজার ২৯ কোটি টাকার। হীরের গয়নার ক্ষেত্রেও ছবিটা অত্যন্ত ফ্যাকাশে। গত বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত ৩৫ হাজার ১৮০ কোটি টাকার হীরের গয়না রপ্তানি হয়েছিল। এবার তা দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৫২৫ কোটি টাকায়। সহজেই অনুমান করা যায়, কতটা কঠিন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ভারতের গয়না রপ্তানির বাজার। -ফাইল চিত্র