পল্লব চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা: করোনার কারণে বিভিন্ন আদালতে অসংখ্য মামলার শুনানি পিছিয়ে গিয়েছে। কোনও মামলা অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে, কোনও মামলায় হয়তো শুনানি এখনও শুরুই হয়নি। আবার এমন অনেক মামলা রয়েছে, যেগুলির শুনানি অনেকটা এগিয়ে গেলেও করোনা আবহে থমকে রয়েছে। হয় ভার্চুয়াল, না হয় সশরীরে হাজির হয়ে এই সব মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ের প্রেক্ষিত ধরে কলকাতা হাইকোর্টের দুই বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও শুভ্রা ঘোষের বেঞ্চ নিম্ন আদালতগুলিকে এক নির্দেশিকায় বলেছে, যেসব সেশন মামলায় অভিযুক্তরা দু’বছরের বেশি ও ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের মামলায় ছ’মাসের বেশি বন্দি রয়েছে, করোনাবিধি মেনেই সেইসব মামলার শুনানি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে করতে হবে। বিশেষ করে পকসো, ধর্ষণ, দুর্নীতি দমন আইন বা নেগোসিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট ইত্যাদি মামলায় যেহেতু সময়ে মামলা শেষ করতে হয়, সেহেতু সেগুলির শুনানি দ্রুত শুরু করতে হবে। বিশেষ আদালতে আর্থিক কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত বকেয়া ফৌজদারি মামলা বা এনআই অ্যাক্ট অনুযায়ী দায়ের হওয়া মামলাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। সময় বেঁধেই শুনানির কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এগুলি আর ফেলে রাখা যাবে না। এই নির্দেশিকার প্রতিলিপি প্রত্যেক জেলা বিচারক ও মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটদের পাঠিয়ে দেবেন হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল।
এক বিচারাধীন বন্দির জামিনের আবেদনের উপর শুনানি করতে গিয়েই বেঞ্চ এই অভিমত দিয়েছে। আবেদনকারী নির্মল মণ্ডল পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বন্দি রয়েছে জেলে। অদূর ভবিষ্যতে এই মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার সম্ভাবনা কম। তাই জামিন মঞ্জুরের আর্জি জানান তার আইনজীবী। সরকারপক্ষ অবশ্য কড়া যুক্তিকে সামনে এনে বলে, যে দলের সদস্য হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক পাওয়া গিয়েছিল। ইতিমধ্যেই ওই গ্যাংয়ের একজনের জামিনের আবেদন হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছে। বেঞ্চ এই যুক্তি শোনার পর নির্মল মণ্ডলের আর্জিও নামঞ্জুর করে দেয়।