নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: করোনা সংক্রমণকে পিছনে ফেলে নতুন জীবনে ফিরতে চাইছেন সাধারণ মানুষ। পোশাকি ভাষায় এর নাম ‘নিউ নর্মাল’। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে রোগমুক্ত স্বাভাবিক জীবন-যাপন করা যায়, তার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে দেশের প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। বাদ নেই আইআইটি খড়্গপুরও। এক অনলাইন আলোচনাসভায় এখানকার ডিরেক্টর ভি কে তিওয়ারি বলেন, স্কুল-কলেজ পড়ুয়ারা এখন অনলাইন ক্লাসে অভ্যস্ত। অথচ অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ইন্টারনেটের সংযোগ জোরালো না হওয়ায় অনেকেই ক্লাস করতে অসুবিধায় পড়েন। আইআইটি খড়্গপুর এ ব্যাপারে একটি সমাধান সূত্র আনতে চলেছে। এমন একটি কৌশল সামনে আসতে চলেছে, যেখানে কম ফ্রিকোয়েন্সির ব্যান্ডউইথেও অনলাইনে ক্লাস করতে ছাত্র-ছাত্রীদের কোনও অসুবিধা হবে না। এর পাশাপাশি ডিরেক্টর জানিয়েছেন, তাঁরা ইন্টারনেট অব থিংস-এর সাহায্য নিয়ে এমন একটি মেশিন সামনে আনছেন, যা করোনা রোগীদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা অনেকটাই লাঘব করবে। তাঁর কথায়, দু-তিন বছর আগেই খড়্গপুর আইআইটিতে এই মেশিনটি তৈরীর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। যাঁরা ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজ বা জোরালো শ্বাসের সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের জন্য ইলেকট্রনিক্স ডিপার্টমেন্ট এই মেশিনটি তৈরির উদ্যোগ নেয়। এর জন্য ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিকেল রিসার্চ বা আইসিএমআর -এর থেকে ১৫ কোটি টাকা অনুদান মিলেছে বলে জানিয়েছেন ভি কে তিওয়ারি।
ওই অনলাইন আলোচনা সভায় সিএসআইআর -সিএমইআরআইয়ের ডিরেক্টর হরিশ হিরানি বলেন, করোনার মোকাবিলায় তাঁরা একগুচ্ছ নতুন উদ্ভাবন সামনে এনেছেন। এর মধ্যে যেমন রয়েছে মাস্ক এটিএম, গাড়ি বা কার স্যানিটাইজার, জুতো বা শ্যু স্যানিটাইজার, তেমনই আছে অভিনব হ্যান্ডওয়াশ মেশিন। তবে ডিরেক্টর দাবি করেন, তাঁরা মাস্ক তৈরি করাচ্ছেন ইনস্টিটিউট সংলগ্ন এলাকার মহিলাদের দিয়ে, এবং তাঁদের আত্মনির্ভর হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন। ইতিমধ্যেই ১০ লক্ষ মাস্ক তৈরি হয়ে গিয়েছে। তবে হরিশ হিরানির কথায়, করোনার চেন বা শৃঙ্খলা ভাঙতে মানুষ বিভিন্ন পদক্ষেপ করছেন ঠিকই। কিন্তু একটি বিষয় অবহেলিত থেকেই যাচ্ছে। তা হল, মানুষের ব্যবহৃত বর্জ্য, বিশেষত নর্দমার জল করোনামুক্ত করা হচ্ছে না। গবেষণা বলছে, নোংরা জলের মধ্যেও করোনা ৩৩ দিন বেঁচে থাকতে পারে । একজন করোনা সংক্রমিত রোগীকে যদি আইসোলেশনে রাখা হয়, তবু তাঁর ব্যবহৃত জল বা বর্জ্যের মাধ্যমেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে। ডিরেক্টর দাবি করেন, তাঁরা এমন একটি কৌশল এনেছেন, যাতে এই সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।