কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
সম্প্রতি খোদ কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রমমন্ত্রকের রিপোর্টেই এই পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে একেবারে রাজ্য ধরে ধরে। আর নির্মাণকর্মীদের বঞ্চিত হওয়ার কারণ হিসেবে মূলত দায়ী করা হয়েছে নাম নথিভুক্ত না হওয়াকেই। এব্যাপারে কেন্দ্র আঙুল তুলেছে দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্য সরকারগুলির দিকেই। তবে আশার কথা, শ্রমিকদের দুর্দশা ঘোচাতে এখন নড়েচড়ে বসেছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তিন মাসের মধ্যে নাম নথিভুক্তকরণের কাজ সেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে শ্রমমন্ত্রক। রাজ্যগুলিকে পাঠানো ওই রিপোর্ট সহ শ্রমসচিব হীরালাল সামারিয়া একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠির মূল প্রতিপাদ্যই হল, স্রেফ একটি টেলিফোন করে নির্মাণকর্মীদের হদিশ জেনে তথ্যভাণ্ডার পূরণ করুক রাজ্যগুলিতে তৈরি হওয়া সংশ্লিষ্ট বোর্ড। তার পরেই দ্রুত সামাজিক সুরক্ষার সুবিধা নির্মাণকর্মীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হোক। এই বিশেষ অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মিশন মোড প্রজেক্ট’।
শ্রমসচিবের পাঠানো রিপোর্টে বলা হয়েছে, ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে অর্গানাইজেশনের হিসেবে দেশে এই মুহূর্তে নির্মাণকর্মীর সংখ্যা অন্তত পাঁচ কোটি। মোট শ্রমিক সংখ্যা (৫০ কোটি)’র ১০ শতাংশ। কোভিড মহামারীতে তাঁদের এখন করুণ অবস্থা। রাজ্যওয়াড়ি পাওয়া হিসেব বলছে, এই বিপুল সংখ্যক নির্মাণকর্মীর মধ্যে ৩ কোটি ৪৮ লক্ষ শ্রমিক কোনও না কোনও সময়ে একবার নাম নথিভুক্ত করেছেন সরকারি নথিতে। অর্থাৎ, দেড় কোটিরও বেশি নির্মাণকর্মীর নাম কখনও তোলাই হয়নি। কিন্তু ১৯৯৬ সালের আইন বলছে, কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের নানা ধরনের সামাজিক সুরক্ষার সুবিধা পেতে হলে নির্মাণ শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত করা বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি ফি বছর তাঁদের নাম, ঠিকানা ও পরিচয় রিনিউ করতে হবে। নিয়মিতভাবে যাঁরা নাম নথিভুক্ত করবেন তাঁদের সরকারি পরিভাষায় বলা হয় ‘লাইভ ওয়ার্কার’। এবং তালিকায় নাম থাকার কারণে এখন সরকারি সুবিধা পাচ্ছেন ২ কোটি ৫৭ লক্ষ ‘লাইভ’ নির্মাণকর্মী। রাজ্যগুলির সংশ্লিষ্ট বোর্ড এই সংখ্যক কর্মীর কাছে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা অনুদান পৌঁছে দিয়েছে। কোভিড পর্বে রাজ্যভিত্তিক মাসে ১ থেকে ৬ হাজার টাকা করে ঢুকেছে তাঁদের অ্যাকাউন্টে। বাকি প্রায় অর্ধেক নির্মাণকর্মীর অ্যাকাউন্টে একটা টাকাও ঢোকেনি। অথচ, সব রাজ্য ও কেন্দ্রীয় বোর্ড মিলিয়ে নির্মাণ সেস বাবদ এ পর্যন্ত প্রায় ৬২ হাজার কোটি টাকা আদায় হয়েছে। তার মধ্যে ৩৮ হাজার কোটি টাকা বোর্ডগুলি এখনও খরচ করতেই পারেনি। এই অবস্থায় এখন তিন মাসের জন্য সব রাজ্যকে তথ্যভাণ্ডার তৈরির মাধ্যমে ‘মিশন মোড প্রজেক্ট’-কে পাখির চোখ করার পরামর্শ দিয়েছেন হীরালাল। উদ্দেশ্য একটাই—সব নির্মাণকর্মীর কাছে নগদ সহ বিভিন্ন সরকারি সুবিধাগুলি পাইয়ে দেওয়া।