পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
এদিন সাত সকালেই সজাগ তারাতলা মোড়ের নাকা পয়েন্ট। এক সাইকেল আরোহীকে দেখা যায়, একটি সাদা কাগজ সেঁটে চলছেন। তাতে প্রিন্ট করা, ‘ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল ডিউটি, গভঃ অব ওয়েস্ট বেঙ্গল’। তা দেখে সন্দেহ হয় কর্তব্যরত পুলিসের। তাঁর পরিচয়পত্র এবং লকডাউনে রাস্তায় বেরনোর অনুমতিপত্র চাওয়া হয়। দেখাতে পারেননি তিনি। নানা অজুহাতে তিনি পুলিসকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন। শাস্তি হিসেবে ঘাড়ে সাইকেল নিয়ে বাড়ির পথে তাঁকে হাঁটতে বলেন পুলিস কর্মীরা। খিদিরপুরেও একটি প্রাইভেট সংস্থার গাড়িকে পাকড়াও করা হয়। গাড়ির চালকের অনুমতিপত্রের মেয়াদ শেষ। পুলিসকর্মীরা তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তারাতলা, খিদিরপুর ছাড়াও শহরের বহু এলাকায় এই ধরণের ছবি ধরা পড়েছে।
তবে, কিছু বেয়াড়া মানুষের এইসব অজুহাত, বাহানা বাদ দিলে প্রায় ‘ঘরবন্দি’ ছিল কলকাতা। উত্তরের শ্যামবাজার, শোভাবাজার, সেন্ট্রাল অ্যভিনিউয়ের প্রতিটি ক্রসিংয়ে কঠোরভাবে নাকা চেকিং চলে সকাল থেকে। লোকজনের দেখা মেলেনি মৌলালি, ধর্মতলা, ডালহৌসির অফিসপাড়ায়। সল্টলেক, রাজারহাট, নিউটাউনেও সুষ্ঠুভাবেই পালিত হয় সাপ্তাহিক লকডাউন। সেক্টর ফাইভ, করুণাময়ীর অফিস পাড়া ছিল ফাঁকা।
লকডাউনে স্তব্ধ ছিল দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিও। পুর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে মুর্শিদাবাদ, ফুলিয়া থেকে পুরুলিয়া প্রতিটি প্রান্তেই অধিকাংশ মানুষই ঘরবন্দি ছিলেন। সকাল থেকে পুলিসও ছিল বেশ সক্রিয়। তবে, অপ্রয়োজনে বহু মানুষ রাস্তায় বেরিয়েছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কাউকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। উত্তরবঙ্গের আট জেলাতেও সফল লকডাউন। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে পা রাখেননি সিংহভাগ মানুষই। যাঁরা বেরিয়েছিলেন তাঁদের পুলিসি জেরার মুখে পড়তে হয়। ময়নাগুড়িতে পুরনো প্রেসক্রিপশন হাতে নিয়ে কয়েকজন মোটর বাইকে চেপে ‘লকডাউন’ দেখতে বেরিয়েছিলেন। তাঁদের বাইক বাজেয়াপ্ত করে পুলিস। শিলিগুড়িতে কড়া নজরদারি ছিল পুলিসের। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার শহরেও শুনশান ছিল রাস্তাঘাট। কঠোরভাবে লকডাউন পালিত হয় গৌড়বঙ্গের মালদহ, বালুরঘাটেও। একই ছবি ধরা পড়েছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে। বারুইপুরেই এক জায়গায় নবদম্পতি বিয়ে সেরে ফেরার সময় গাড়ি আটকায় পুলিস। দেখা যায়, গাড়ি চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই! অনেক আবেদন নিবেদনের পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। উত্তর ২৪ পরগনার গ্রামীণ এলাকায় সকালের দিকে কোথাও কোথাও লোকজনকে বেরতে দেখা গেলেও পুলিসের টহলদারি শুরু হতেই রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যায়। বারাকপুরের পুলিস কমিশনার মনোজ ভার্মা বলেন, মোট চারটি কেস রুজু হয়েছে। বিকেল পর্যন্ত ২৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বারাসত, বসিরহাটও ছিল শুনশান।