বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
কী কী জানাতে হবে শিক্ষকদের? ১৬ মার্চ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিনি ক’টি ক্লাস কোন পদ্ধতিতে নিয়েছেন, প্রতিদিন কত সময় গড়ে ব্যয় করেছেন, জানাতে হবে। প্রথম এবং দ্বিতীয় সামেটিভ মূল্যায়নের জন্য নির্দিষ্ট বিষয়ের বরাদ্দ সিলেবাসের কত শতাংশ শিক্ষকরা শেষ করেছেন, জানাতে হবে তাও। এছাড়া প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্লাস নেওয়ার পদ্ধতি, যেমন— টেলিফোন, হোয়াটসঅ্যাপ, অডিও বা ভিডিও রেকর্ডিং, ইউটিউব ভিডিও, গ্রুপ ভিডিও কলিং প্রভৃতির মধ্যে কোনটি তিনি বেছে নিয়েছেন, তার উল্লেখ করতে হবে। আরও আছে। তিনি পড়ুয়াদের কোনও হোম অ্যাসাইনমেন্ট দিয়েছেন কি না, সেই অ্যাসাইনমেন্টের কত শতাংশ ফেরত পেয়েছেন, জানাতে হবে। ‘অফলাইনে ক্লাস নিয়েছি’ বলে ছেড়ে দিলে চলবে না। সেটা কোন পদ্ধতিতে হয়েছে, অর্থাৎ ছাত্রের বাড়ি গিয়ে নাকি অন্য কোথাও ডেকে—সেই তথ্য জানাতে হবে। পাঠদান ছাড়া মিড ডে মিল বিতরণের মতো প্রশাসনিক কাজে ওই শিক্ষক অংশগ্রহণ করেছেন কি না, সেই তথ্যও হাতে রাখছে বিকাশ ভবন। এর পাশাপাশি, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে স্কুল বন্ধ থাকলে কোন কার্যকরী পদ্ধতিতে পঠনপাঠন চালানো যাবে, সে ব্যাপারে শিক্ষকদের পরামর্শ চাওয়া হয়েছে। স্কুলগুলির তরফে সব শিক্ষকদের সংকলিত রিপোর্ট ডিআই-এর কাছে জমা পড়বে।
শিক্ষাদপ্তরের এই তথ্য চাওয়ার বিষয়ে শিক্ষক এবং প্রধান শিক্ষকদের একটা বড় অংশ থেকেই প্রতিবাদ আসতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। কারণ, এসব ব্যাপারে শিক্ষকদের কখনওই কোনও বাধ্যবাধকতা ছিল না। পড়ুয়াদের পাঠদানের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষকদের কাছে মৌখিকভাবে বিভিন্ন আবেদন করেছেন। প্রয়োজনে স্থানীয় শিক্ষকদের পড়ুয়াদের বাড়ি গিয়ে পড়া বুঝিয়ে আসতে বলেছিলেন। কিন্তু, এ বিষয়ে কোনও নির্দেশিকা জারি করে তা আবশ্যিক করা হয়নি। সরকারি ওয়েব পোর্টালের জন্য একটা সময় ভিডিও চাওয়া হয়েছিল শিক্ষকদের থেকে। বাছাই করে সেই ভিডিওগুলি পড়ুয়াদের জন্য পোস্ট করার কথা হয়েছিল। কিন্তু, এটাও বাধ্যতামূলক ছিল না।
কয়েকজন প্রধান শিক্ষক নিজেদের উদ্যোগে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ বানিয়ে তাতে শিক্ষক ও পড়ুয়াদের যুক্ত করে পাঠদানের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। সিনিয়র শিক্ষকরা বলেন, এ বিষয়ে যখন রাজ্য সরকারের কোনও নির্দেশিকা নেই, তখন আগ বাড়িয়ে উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজন কী? শিক্ষকদের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়েছিল, অধিকাংশ পড়ুয়ার কাছেই স্মার্টফোন বা ইন্টারনেট নেই। তারা তো পিছিয়ে পড়বে। তবে নিন্দুকদের দাবি, এই যুক্তির মাধ্যমে শিক্ষকদের একটা বড় অংশের মধ্যে দায়দায়িত্ব না নিতে চাওয়ার প্রবণতাই প্রকট হয়ে উঠেছে। করোনার দোহাই দিয়ে মিড ডে মিলে অংশগ্রহণ করতে চাননি অনেকে। সেই খবরেও শিক্ষাদপ্তর যথেষ্টই খাপ্পা। তাই ভর্তি সহ আরও একাধিক বিষয়ের জন্য শিক্ষকদের স্কুলে আসা বাধ্যতামূলক করেছে শিক্ষাদপ্তর। সহকারী প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন সিএএইচএমের সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘এ নিয়ে কোনও অভিন্ন নির্দেশিকা বা পরিকল্পনা ছিল না। তাই এই পদ্ধতিতে রিপোর্ট দেওয়া কীভাবে সম্ভব হবে, জানি না।’