গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
কোভিডের দাপটে দেওয়াল লিখনের ভবিষ্যৎ গভীর সঙ্কটে। দেওয়ালে দেওয়ালে উন্নয়নের ফিরিস্তি লেখা আর হবে কি না, কে জানে! অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে সভা-সমিতি-সমাবেশও। মাঠ-ময়দানে উন্নয়নের ফলাও প্রচার কর্মসূচি থমকে। সময়ে ভোট হলে বাকি আর সাত-আটমাস। এই মুহূর্তে মারণ ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত থেমে নেই। তা হলে সরকারের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের কথা মানুষের কাছে পৌঁছবে কীভাবে?
এক কথায় উত্তর ‘ভার্চুয়াল’ কৌশল। আর সে ক্ষেত্রে বড় মাধ্যম এখন ‘ফেসবুক’, ‘ট্যুইটার’ কিংবা ‘হোয়াটসঅ্যাপ’। দেশে মোবাইল বিপ্লবের ২৫ বছর পার হয়েছে ৩১ জুলাই। গাঁ-গঞ্জের লোকেদের হাতে হাতে এখন স্মার্ট ফোন। ইন্টারনেটের সংযোগও মিলছে প্রত্যন্ত এলাকায়। ফলে একুশে জুলাই তৃণমূলের শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানে দলীয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের সাক্ষী থাকতে কলকাতায় আসতে হয়নি পাহাড় কিংবা জঙ্গলমহলকে। পৌঁছে দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। ইতিমধ্যে একুশের নির্বাচনকে পাখির চোখ করে বিভিন্ন ‘ভার্চুয়াল’ কর্মসূচি নিচ্ছে গেরুয়া শিবির। সরকার বিরোধী প্রচারেও ‘অতি সক্রিয়’ বিজেপির ‘আইটি সেল’। অভিযোগ, রাজ্যের উন্নয়ন নিয়ে গঠনমূলক সমালোচনা না করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি। বিরোধীদের এই অপপ্রচারের জবাব দিতেই প্রতিটি দপ্তরে ‘ফেসবুক’ ও ‘ট্যুইটার’ অ্যাকাউন্ট খুলতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কোভিডের আবহে স্বাস্থ্যদপ্তরের ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে। পুরদস্তুর ‘অ্যাকটিভ’ মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়, পুলিস দপ্তরের ‘ফেসবুক’, ‘ট্যুইটার’ অ্যাকাউন্টও। একইভাবে এবার কৃষি, শিল্প, পূর্ত, জনস্বাস্থ্য কারিগরি, শ্রম, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন, সংখ্যালঘু উন্নয়ন, পুর ও নগরোন্নয়ন, ক্রীড়া-যুবকল্যাণ সহ রাজ্যের মোট ৫২ দপ্তরে সোশ্যাল মিডিয়ার এই দুই মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট খুলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই মতো ক’দিন আগেই ‘ফেসবুক’ ও ‘ট্যুইটার’ অ্যাকাউন্ট খুলেছে খাদ্য দপ্তর। পঞ্চায়েত দপ্তরও খুব শীঘ্রই খুলবে বলে জানা গিয়েছে। মূলত এই কারণেই জেলাশাসকদের কাছে উন্নয়ন-তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে নবান্ন। গত ৩১ জুলাই প্রত্যেক জেলাশাসকের কাছে এসেছে নির্দেশিকা। তাতে বলা হয়েছে, গত ন’বছরে জেলায় কত ভাগ মানুষ সরকারি পরিষেবা পেয়েছেন। জয় জোহার পেনশন, তফসিলি বন্ধু পেনশন, জাগো, মাটির সৃষ্টি যোজনায় সুবিধা প্রাপকদের সঠিক পরিসংখ্যান দিতে হবে। প্রতিটি দপ্তর কী কী কাজ করেছে, তারও উল্লেখ করতে হবে।
২০১১ সালের পর রাজ্যের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে নজরকাড়া উন্নয়ন হয়েছে। জেলায় জেলায় তৈরি হয়েছে মাল্টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, ন্যায্যমূল্যে ওষুধ দোকান ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। স্বাস্থ্যসাথী এবং শিশুসাথী প্রকল্পও চলছে সাফল্যের সঙ্গে। শিক্ষাক্ষেত্রেও পরিবর্তন কম কিছু নয়। জেলায় জেলায় হয়েছে প্রাইমারি, আপার প্রাইমারি স্কুল। সরকারি কলেজ, আইটিআই এবং পলিটেকনিক। আর সবুজসাথী প্রকল্প তো ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। ভূমি সংস্কার, কৃষি, কৃষি-বিপণন এবং পশুপালনে কী কী উন্নয়ন হয়েছে, তারও তথ্য জোগাড় হচ্ছে। নিজগৃহ নিজভূমি প্রকল্পে পাট্টা, কিষাণ ক্রেডিট কার্ড, কিষাণমান্ডি—সবই থাকছে রিপোর্টে। জেলাশাসকদের ‘ফেসবুক’ কিংবা ‘ট্যুইটার’ অ্যাকাউন্টে উন্নয়নের তথ্য তুলে ধরার নির্দেশও দিয়েছে নবান্ন।