কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
ইতিমধ্যেই ইউরোপ, ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চলছে ‘কোভিশিল্ড’-এর। ব্রাজিলে চলছে ফেজ থ্রি’র হিউম্যান ট্রায়াল। প্রাথমিক পর্যায়ে ব্রাজিলে এই ভ্যাকসিনের কাজ অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। তাই ভারতে প্রথম ধাপেই এই ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়ালের ফেজ টু এবং থ্রি’র একসঙ্গে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমোদন দিল ‘ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া’। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও কেমব্রিজে স্থাপিত সুইডেনের কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা যৌথ উদ্যোগে ‘কোভিশিল্ড’ তৈরি করেছে। ভারতে তাদের পার্টনার পুনের সংস্থা ‘সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া’। অন্যান্য টিকা তৈরিতে এই সংস্থার পেশাদারিত্ব দেশ-বিদেশে উচ্চ প্রশংসিত। ডিপিটি, বিসিজি, সোয়াইন ফ্লুর টিকাও তৈরি করে সেরাম ইনস্টিটিউট।
কোভিডের মহামারী রুখতে যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাকসিন বাজারে আনতে চাইছে কেন্দ্র। প্রাথমিকভাবে আইসিএমআর এবং ভারত বায়োটেকের তৈরি ‘কোভ্যাকসিনে’র উপরই জোর দেওয়া হয়েছিল। চলছিল দ্রুত বাজারে আনার তোড়জোড়ও। সেইসঙ্গে ক্যাডিলা কোম্পানির তৈরি ভ্যাকসিন ‘জাইকোভ-ডি’ নিয়েও তৎপর ছিল কেন্দ্র। কিন্তু এগুলি এখনও ফেজ ওয়ান পর্যায়ে হিউম্যান ট্রায়ালে। সম্প্রতি আইসিএমআরের তরফে বলা হয়েছে, ‘কোভ্যাকসিন’ কিংবা ‘জাইকোভ-ডি’র চূড়ান্ত সাফল্য পেতে কমপক্ষে তিন মাস সময় লাগবে। ফলে এই মুহূর্তে কোভিডের বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে বাড়তি সময় দেওয়াটা বেশ ঝুঁকির। সে ক্ষেত্রে ‘কোভিশিল্ড’ ছাড়পত্র পেলে সেই ঝুঁকি কিছুটা কমতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, ব্রাজিলে ‘কোভিশিল্ড’-এর ফেজ থ্রি পর্যায়ের ট্রায়ালে ভালোই সাফল্য মিলেছে। তবে পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্য নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নির্দিষ্ট কিছু গাইডলাইনও বেঁধে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
নয়াদিল্লি এবং যোধপুরের এইমস সহ দেশের মোট ১৭টি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে খুব শীঘ্রই মানবদেহে পরীক্ষামূলক ‘কোভিশিল্ড’ ভ্যাকসিনের প্রয়োগ শুরু হবে। বিভিন্ন প্রান্তে ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চলবে। কোভিড ভাইরাসের চরিত্রগত বৈশিষ্ট্যের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত। কোন অঞ্চলে কীভাবে ভ্যাকসিনটি কাজ করছে এবং কতটা কাজ করছে, তার নিখুঁত বিশ্লেষণ করবেন গবেষকরা। ফলাফলের সাফল্যও উঠে আসবে সেই বিশ্লেষণ থেকে। সেইমতো এইমস ছাড়াও পুনের বি জে মেডিক্যাল কলেজ, গোরক্ষপুরের নেহরু হাসপাতাল, বিশাখাপত্তনমের অন্ধ্র মেডিক্যাল কলেজ, মাইসুরু জে জে অ্যাকাডেমি, পিজিআই চণ্ডীগড়, পাটনার রাজেন্দ্র মেমোরিয়াল রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সের মতো প্রতিষ্ঠানে ‘কোভিশিল্ড’-এর প্রয়োগ চলবে।
১৮ থেকে ৬৫ বছর বয়স্ক সম্পূর্ণ সুস্থ নাগরিকের শরীরে ইঞ্জেকশনের আকারে দু’টি ডোজে এই পরীক্ষা চলবে বলে জানা গিয়েছে। প্রথম ডোজ দেওয়ার ২৯ দিনের মাথায় ফের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে ১ হাজার ৬০০ জনের শরীরে তা প্রয়োগ করা হবে। তার পরেই শুরু পর্যবেক্ষণ। এক্ষেত্রে মূলত দেখা হবে মানুষের সহ্য করার ক্ষমতা, ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা এবং কতদিন পর্যন্ত মানবদেহে থাকছে ভ্যাকসিনের প্রভাব। এইসব বিষয়গুলি যাচাই করার পরই বাজারে আসবে ‘কোভিশিল্ড’।