কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
সরকারি হাসপাতালে কোভিড আক্রান্তদের বেড না পাওয়ার অভিযোগ কম নয়। সে ক্ষেত্রে ‘ব্যতিক্রম’ মনে হতে পারে বিকাশবাবুর ঘটনা। তবে কোভিড-যুদ্ধের কন্ট্রোল রুমে শরণাপন্ন হয়ে পরিষেবা পাননি, এমন অভিযোগ নিতান্তই নগণ্য। টেলি মেডিসিন থেকে হাসপাতালে ভর্তি। রাত-বিরেতে হোক বা দিনে-দুপুরে। ফোনের লাইন পেলেই মিলছে সুরাহা। গভীর রাতেও অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ছুটছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। অন্তত ১০ দিনে ‘বিকাশবাবু’দের এই নিশ্চয়তা দিতে পেরেছে স্বাস্থ্যভবন। সেই সঙ্গে উদ্বেগও বাড়াচ্ছে কিছু ফোন। বিকাশবাবুর বাড়ি কন্টেইনমেন্ট জোনে। রাজ্যের বিভিন্ন সংক্রামিত এলাকা থেকে ফোন আসাটাই স্বাভাবিক বলে ধরে নেন স্বাস্থ্যকর্তারা। কিন্তু দু’-চারদিন এমন কিছু এলাকা থেকে ফোন আসছে, যেগুলি কন্টেইনমেন্ট জোনই নয়। যার অর্থ, সংক্রমণ দ্রুত ছড়াচ্ছে। তাতে উৎকণ্ঠা বাড়ছে স্বাস্থ্য ভবনের।
কন্ট্রোল রুমে তথ্য বলছে, কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলি মিলিয়ে দিনে ৪০০-৪৫০ জন কোভিড রোগী ফোন করছেন। তাঁদের সিংহভাগই ভর্তি হচ্ছেন কন্ট্রোল রুমের সরাসরি তত্ত্বাবধানে। আবার কাউকে কাউকে নিকটবর্তী কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করার সুপারিশও করা হচ্ছে। শুধু এই পাঁচ জেলাই নয়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও ফোন আসছে। তখন সমন্বয়ের ভূমিকা পালন করছে কন্ট্রোল রুম। জেলা সদর হাসপাতাল কিংবা জেলাশাসকের অফিসের সঙ্গে রোগীকে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে। জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় ফোন নম্বরও।
কিছু ক্ষেত্রে ফোনের লাইন না পাওয়ার অভিযোগও উঠছে। যেমন, যাদবপুরের বাসিন্দা সুমনা চক্রবর্তী (নাম পরিবর্তিত)। ক’দিন ধরে সামান্য সর্দি-জ্বরে ভুগছেন তিনি। চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। ফোন করেছিলেন কন্ট্রোল রুমে। পর পর তিনবার চেষ্টা করেও লাইন পাননি বলে অভিযোগ। যদিও স্বাস্থ্য ভবনের যুক্তি, কন্ট্রোল রুমে প্রচুর ফোন আসছে। মাঝে মাঝে প্রায় প্রতিটি লাইনই ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ধৈর্য্য ধরে কয়েকবার চেষ্টা করলেই লাইন পাওয়া যাবে।
কোভিডের মোকাবিলায় গত ২১ জুলাই সল্টলেকের স্বাস্থ্য ভবনে কন্ট্রোল রুম চালু করে রাজ্য। টেলিফোনের লাইন রয়েছে ৭০টি। অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা ১২০টি। ৭৫ জন চিকিৎসকসহ মোট ১৫০ জন স্বাস্থ্যকর্মী নিয়ে গড়া হয়েছে বিশেষ ‘কোভিড-টিম’। তিনটি শিফটে ২৪ ঘণ্টাই স্বাস্থ্য পরিষেবা দিচ্ছেন তাঁরা। প্রতিটি শিফটে থাকছেন ২৫ জন করে চিকিৎসক। প্রধানত তিনটি পরিষেবা মিলছে কন্ট্রোল রুম থেকে। এক, কোভিড সংক্রান্ত স্বাস্থ্য সচেতনার পাঠ দেওয়া ও তথ্য সরবরাহ করা। এক্ষেত্রে দিনে ফোন আসছে প্রায় ২ হাজার। দুই, টেলি-মেডিসিন। অর্থাৎ, চিকিৎসার বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া। কোভিডের সামান্য উপসর্গ দেখা দিলেই ফোন করছেন সাধারণ মানুষ। প্রতিদিন এই সংক্রান্ত প্রায় ১ হাজার ২০০ ফোন আসছে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে। তিন, কোভিড আক্রান্তদের ভর্তির ব্যবস্থা করা। জানা গিয়েছে, দিনে ৪০০-৪৫০ জন ফোন করে কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করানোর অনুরোধ করছেন। কন্ট্রোল রুমের প্রতিটি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে রাজ্যের ১১০টি ‘সেফ হোম’কেও।