বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
কোভিডের ধাক্কায় সবকিছুই ভেঙে চুরমার। ছন্দহারা মানুষের স্বাভাবিক জীবনভাবনা। ‘দায়বদ্ধতা’, ‘মানবিকতা’, ‘মমত্ববোধ’ এখন নিছকই কথার কথা। পাড়ায় কেউ কোভিডে আক্রান্ত মানেই তিনি অচ্ছ্যুৎ। তাঁর বাড়ির ছায়াও এড়িয়ে চলেন পড়শিরা। একই ছবি আবাসনেও। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেও রেহাই মিলছে না। মুখোমুখি হচ্ছেন সামাজিক বয়কটের। বাড়িতে কিংবা পাড়াতে ঢুকতে না দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে আকছার। ফলে জীবন-যুদ্ধে কোভিডকে হারিয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছেন অনেকেই। প্রতিটি হাসপাতালের ‘পোস্ট কোভিড কাউন্সেলিং সেন্টার’-এ অবসাদগ্রস্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছেই। এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় রোগীর ‘ডিসচার্জ সার্টিফিকেট’-এর উপরই বেশি জোর দিচ্ছে রাজ্য। সংশোধিত নীতিতে বলা হয়েছে, রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ লিখতে হবে ‘ডিসচার্জ সার্টিফিকেট’-এ। একঘরে হওয়া থেকে বাঁচতে সেই সার্টিফিকেটই হয়ে উঠবে কোভিড বিজয়ীদের অস্ত্র। কীভাবে লেখা হবে সেই সার্টিফিকেট? তারও স্পষ্ট রূপরেখা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে সংশোধিত নীতিতে। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর, সক্রিয় কোভিড রোগীদের তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। এক, একেবারে হালকা বা মৃদু উপসর্গ থাকা রোগী। চিকিৎসার ভাষায় যাকে বলা হচ্ছে ‘প্রিসিমটমেটিক কেস’। দুই, মাঝারি উপসর্গ রয়েছে এমন রোগী। যাকে বলা হচ্ছে ‘মডারেট কেস’। তিন, ‘সিভিয়ার কেস’। অর্থাৎ যে সকল কোভিড রোগী এইচআইভি, ক্যান্সারের মতো অন্যান্য মারণ রোগে আগে থেকেই আক্রান্ত।
এই তিনটি পর্যায়ের রোগীদের ‘ডিসচার্জ সার্টিফিকেট’ দেওয়ার পদ্ধতি স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে সংশোধিত নীতিতে। পর পর তিনদিন জ্বর না এলে প্রথম পর্যায়ের রোগীদের ১০ দিনের মধ্যে ছেড়ে দিতে হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ের ‘ডিসচার্জ দেওয়ার ক্ষেত্রে আবার দু’টি ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ধাপে দেখা হবে ওষুধ ছাড়া রোগীর জ্বর আসছে না। অক্সিজেন থেরাপিরও আর প্রয়োজন পড়ছে না। এমন রোগীরা ১০ দিনের মধ্যে ছুটি পাবেন। দ্বিতীয় ধাপের রোগীদের ‘ডিসচার্জ’ দেওয়ার নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি। সে ক্ষেত্রে রোগীদের বিভিন্ন উপসর্গের উপর নজর রাখতে বলা হয়েছে। যদি দেখা যায়, রোগীর শ্বাসকষ্ট নেই। জ্বরও আসছে না। ভেন্টিলেশন সাপোর্ট ছাড়াই পর পর তিনদিন দেহের অক্সিজেনের মাত্রা ঠিকঠাক রয়েছে, তবেই সংশ্লিষ্ট রোগীকে ছাড়া হবে। নচেৎ নয়। তৃতীয় পর্যায়ের রোগীদের ক্ষেত্রে সুস্থতার মাপকাঠি ধরা হয়েছে ‘ক্লিনিক্যাল রিকভারি’র উপর। সেই সঙ্গে ডিসচার্জের আগে কোভিড-১৯ পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। উপসর্গ না থাকলেও আরটি-পিসিআর টেস্ট করিয়ে সম্পূর্ণ নিশ্চিত হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সংশোধিত নীতিতে। স্বাস্থ্যদপ্তরের এক আধিকারিক বলেছেন, ‘কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে বহু রোগী ভয়-ভীতিতে হাসপাতাল ছাড়তে চান না। ফলে নতুন রোগীরা চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। নির্দিষ্ট সময়ে সুস্থ রোগীরা ছাড়া পেলে রাজ্যে বেডের সঙ্কট অনেকটাই মিটে যাবে।’