বিতর্ক-বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম-পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থোপার্জনের সুযোগ।প্রতিকার: অন্ধ ব্যক্তিকে সাদা ... বিশদ
এই পরিস্থিতিতে গত সোমবার গেজেট নোটিস বের করে কেন্দ্র জানিয়েছে, হ্যান্ড স্যানিটাইজার মজুত ও বিক্রির ক্ষেত্রে আর ড্রাগ লাইসেন্স লাগবে না। ফলে ফুটপাত, পাড়ার গলি, মুদি বা চায়ের দোকানেও স্যানিটাইজার বিক্রি করা যাবে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, একেই শহর ছেয়েছে নকল স্যানিটাইজারে। এতদিন অপরিহার্য পণ্য আইনের (এসেনশিয়াল কমোডিটিস অর্ডার ২০২০) কারণে অসাধু কারবারিদের কিছুটা ভয়-ডর ছিল। কিন্তু এভাবে বিক্রি হলে দাম ও গুণমান দেখবে কে? কেউ স্টিকার মেরে দাম বাড়ালে ধরবে কে? কেন্দ্রের দাবি, মাস্ক, স্যানিটাইজারের দাম ও সরবরাহ নিয়ে গত ক’মাসে তেমন অভিযোগ আসেনি। তাই অত্যাবশ্যকীয় আইনের আওতা থেকে পণ্যগুলিকে সরানো হয়েছে। তাছাড়া স্যানিটাইজার জনস্বার্থে সহজলভ্য হওয়া উচিত। তাই মজুত ও বিক্রিতে লাইসেন্স রাখার দরকার নেই।
যদিও সমালোচকদের পাল্টা যুক্তি, ১৩ মার্চ যখন কেন্দ্র এই নির্দেশনামা বের করে, দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮২! ১ জুলাই মাস্ক, স্যানিটাইজারে উপর নিয়ন্ত্রণ তুলে দেওয়ার দিন সংখ্যাটা ছিল ৬ লক্ষ ৫ হাজার ২২০। আর বুধবার সন্ধ্যায় তা বেড়ে হয়েছে ১৫ লক্ষ ৫৮ হাজার ৪৪৭। আক্রান্ত কমার নামগন্ধ নেই। মৃত্যুর গ্রাফও ঊর্ধ্বমুখী। অথচ কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ সময়েই নিয়ন্ত্রণ তুলে দিল। সরকারের উপর অ্যালকোহল লবির চাপ ছিল বলেও মনে করছেন অনেকে।
সূত্রের খবর, ১ জুলাইয়ের এই নির্দেশের জন্য মুখিয়ে ছিল কোম্পানিগুলি। তাই চড়চড় করে দামও বাড়তে শুরু করেছে মাস্কের। খুচরো ও পাইকারি দুই বাজারেই ২৮০-৩০০ টাকা পর্যন্ত উঠছে এক-একটি এন-৯৫ মাস্কের দাম। আবার ২০, ২৫, ৩০ টাকায় ফুটপাতেও পাওয়া যাচ্ছে। দামের মাথামুণ্ডু থাকছে না। গুণমানেও নিয়ন্ত্রণ নেই। ঝোপ বুঝে কোপ মারা চলছেই।
ওষুধের দোকানদারদের সংগঠন অল ইন্ডিয়া কেমিস্ট অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউটর্স ফেডারেশন-এর সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ সরকার বলেন, ‘চূড়ান্ত জনস্বার্থবিরোধী নির্দেশ। দাম, মান কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ রইল না। স্রেফ প্রতিযোগিতামূলক বাজার বলে স্যানিটাইজারের দাম এখনও বাড়েনি। কিন্তু, লাইসেন্সের দরকার না থাকলে পাড়ায়-পাড়ায় কুটিরশিল্পের মতো তৈরি হবে। বিক্রিও হবে। যা হচ্ছেও বহু ক্ষেত্রে। মাস্কের দামও চড়ছে।’ বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশন-এর রাজ্য সম্পাদক সজল গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণ তোলা একেবারেই উচিত হয়নি।’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে অবিলম্বে এই নির্দেশ নামা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ওষুধের দোকানদারদের সর্ববৃহৎ সংগঠন এআইওসিডি। রাজ্যের প্রাক্তন ড্রাগ কন্ট্রোলার ডঃ চিন্তামণি ঘোষ বলেন, ‘দুটি নির্দেশই সমর্থনযোগ্য নয়। করোনা ছেলেখেলার বিষয় নয়। ভালো মানের মাস্ক ও স্যানিটাইজার সুলভে পাওয়াটাই জরুরি।’