বিতর্ক-বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম-পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থোপার্জনের সুযোগ।প্রতিকার: অন্ধ ব্যক্তিকে সাদা ... বিশদ
এটিএম কার্ডের পিন নম্বর জেনে নিয়ে টাকা হাতানোর ছক পুরনো। অধিকাংশ মানুষ এখন এব্যাপারে সতর্ক হয়ে গিয়েছেন। করোনা পরিস্থিতিতে এখন বাড়ির বাইরে যাওয়া ঝুঁকির ব্যাপার। ঝোঁক বাড়ছে অনলাইনে কেনাকাটায়। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কৌশল বদলেছে প্রতারকরাও। ঝাড়খণ্ডের জামতারা গ্যাংয়ের একদল সদস্য এই নতুন চক্র শুরু করেছে। ব্যবহৃত জিনিসপত্র কেনাবেচার একটি জনপ্রিয় অ্যাপে তারা ভারতীয় জওয়ানের নামে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলছে। সেখানে গাড়ি, বাইক, স্মার্টফোন সহ নানা লোভনীয় জিনিসের বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। ফেসবুকেও থাকছে সেই বিজ্ঞাপনের লিঙ্ক। ক্লিক করলেই অপরাধীরা ক্রেতার মোবাইল নম্বর নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে শুরু করছে কথোপকথন।
সাইবার অপরাধ নিয়ে এখন অনেকেই সচেতন। তাই অনেক ক্রেতাই বিক্রেতার তথ্য চাইছেন। অপরাধীরা নিমেষের মধ্যে আধার, প্যান, ভোটার কার্ড এমনকী, ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফটোকপিও ক্রেতাদের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দিচ্ছে প্রতারকরা। কিন্তু সে সবই ভুয়ো। ফেসবুক ও সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তারা সেনাবাহিনীর জওয়ানদের ছবি তুলে সেগুলি নিজেদের বলে পাঠিয়ে দিচ্ছে। কলকাতা সহ বিভিন্ন রাজ্যের ঠিকানা, টাকা নেওয়ার জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বরও দেওয়া হচ্ছে। ক্রেতারা সব দেখে কথামতো অর্ধেক টাকা ওই অ্যাকাউন্টে পাঠাচ্ছেন।
তারপর অপরাধীরা জিনিসটি প্যাকিং করার ছবি ও ‘ইন্ডিয়ান আর্মি ট্রান্সপোর্ট পার্সেল’ নামে একটি হোম ডেলিভারি বিল হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দিচ্ছে। বলাই বাহুল্য, সেটিও ভুয়ো। বাকি টাকা অ্যাকাউন্টে পাঠাতে বলা হচ্ছে। ক্রেতারা মাল ডেলিভারি আসছে বিশ্বাস করে তা পাঠিয়েও দিচ্ছেন। কিন্তু জিনিস আর আসছে না। সব ক্ষেত্রে অবশ্য একই পদ্ধতি নিচ্ছে না প্রতারকরা। কারও ক্ষেত্রে একটি কিউআর কোড স্ক্যান করে টাকা দিতে বলা হচ্ছে। স্ক্যান করামাত্র অ্যাকাউন্ট থেকে খোয়া যাচ্ছে টাকা। চলতি মাসেও শুধু কলকাতায় এরকম চার-পাঁচটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে পুলিসের খাতায়।
পুলিসের সাইবার ক্রাইম বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, অপরাধীরা দমদম, মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ সহ বিভিন্ন জায়গার ঠিকানা ব্যবহার করছে। পূর্ব বর্ধমানেও মন্তেশ্বর সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় অনেকে প্রতারিত হয়েছেন। এই জেলা থেকে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা হাতিয়েছে অপরাধীরা। রাজ্য থেকে মোট প্রতারণার পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা। ফেসবুকে পুরস্কার জেতার টোপ দিয়েও একইভাবে প্রতারণা করছে তারা। তাদের কাছে একাধিক জওয়ান প্রতারিত হয়েছেন। এমনকী, তাঁদের হোয়াটসঅ্যাপের প্রোফাইল পিকচার একাধিক ক্রেতার কাছে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে এক ভারতীয় জওয়ান উত্তরপ্রদেশের সাইবার সেলে একটি মামলাও করেছেন। বর্ধমানের সাইবার ক্রাইম থানার আধিকারিক স্নেহাশিস চৌধুরী বলেন, ‘ইন্ডিয়ান আর্মির নামে সাইবার ক্রাইমের মামলা আমাদের জেলাতেও হয়েছে। আমরা জেলা পুলিসের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় সাধারণ মানুষকে সচেতনও করছি।’