কর্মপ্রার্থীরা বেশ কিছু সুযোগের সংবাদে আনন্দিত হবেন। বিদ্যার্থীরা পরিশ্রমের সুফল নিশ্চয় পাবে। ভুল সিদ্ধান্ত থেকে ... বিশদ
কিন্তু কে এই ‘সোনার বাংলা’? পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের হাট থেকে গোরু এনে বাংলাদেশে পাচার করাই তার মূল কাজ। টানা কয়েক বছর ধরে পাচার করে সে এখন রীতিমতো শিল্পপতি হয়ে উঠেছে। হাসপাতাল, প্রাসাদোপম বাড়ি, জাতীয় সড়কের ধারে বিঘার পর বিঘা জমি। নামে-বেনামে বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়ে উঠেছে সে। জেলার বাইরেও ছড়িয়ে রয়েছে তার সম্পত্তি। তার ইশারা ছাড়া গোরু বা মোষের পাল সীমান্তে এখনও কাঁটাতার পেরতে পারে না। দেশ ছাড়িয়ে বাংলাদেশেও নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে রয়েছে এই বাহুবলীর। কিছুদিন আগে কলকাতায় তার অফিস থেকেই নোট বৃষ্টি হয় বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। ওই অফিসে কেন্দ্রীয় একটি সংস্থার প্রতিনিধিরা অভিযানে গিয়েছিলেন। সে সময় ভয়ে টাকার নোট অফিস থেকে নীচে ফেলে দেওয়া হয়। কয়েক মাস আগের এই ঘটনা শোরগোল ফেলে দিয়েছিল।
পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, অনেক প্রভাবশালী তাকে সমঝে চলে। এখন অবশ্য ওই পাচারকারীর ভাগ্না তার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে। এক বছরের বেশি সময় ধরে দু’জনের ঠান্ডা লড়াই শুরু হয়েছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, একসময় মামার গ্যাংয়েই কাজ করত ভাগ্না। কিন্তু মামাকে অন্ধকারে রেখে সে বিশাল সম্পত্তি নিজের নামে করে নেয়। তারপর থেকেই দু’জনের মধ্যে লড়াই শুরু হয়ে যায়। এখন ভাগ্না বাংলাদেশ বা সৌদি আরবে বেশি থাকে। জঙ্গিপুর মহকুমার এক প্রভাবশালী নেতার সঙ্গেও তার টানাপোড়েন রয়েছে। ওই ডনকে সমঝে চলতে হয় তাঁকেও। যদিও এসবের পরও জেলায় তার দাপট আগের মতোই অটুট। সেকারণেই সাগরদিঘির মোড়গ্রামে দিনের বেলায় প্রকাশ্যে ট্রাক পিছু আড়াই থেকে চার হাজার টাকা তোলা আদায় হলেও কেউ প্রতিবাদ করার সাহস দেখায় না। তোলাবাজরা ‘সোনার বাংলার’ নাম করেই সবাইকে ভয় দেখাত বলে অভিযোগ। ব্যাপকভাবে তোলাবাজি চলার পর চালকরাই রুখে দাঁড়ায়। তারা শনিবার তোলাবাজদের তাড়া করে জাতীয় সড়ক থেকে হটিয়ে দেয়। তাদের গাড়িগুলিতেও ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এক ট্রাকচালক বলেন, এতদিন ওভারলোডিং থাকা সত্ত্বেও পুলিস ব্যবস্থা নিত না। তোলাবাজদের প্যাড ছিল রক্ষাকবচ। তা দেখলে পুলিসও দূরে থাকত।
অনেকেই বলছেন, প্রতিবাদ হওয়ায় ওই গোরু পাচারকারীর লোকজন আপাতত তোলাবাজি থেকে পিছু হটেছে। কিন্তু তাদের কতদিন আটকে রাখা যাবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এক পুলিস আধিকারিক বলেন, তোলাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও কেউ কেউ বলছেন, সাপের লেজে পা পড়েছে। এর পরিণতি অন্যরকম হবে। বিকাশ দুবের মতোই মুর্শিদাবাদের ডনও নিজের এলাকায় সমাজসেবী। একাধিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তার ওঠাবসা। এলাকায় তারমতো দানধ্যান খুব কমজনই করে। এমনকী তার হাসপাতালে বিনামূল্যেই অনেককে চিকিৎসা করে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, এর পিছনে ভবিষ্যতের জনপ্রতিনিধি হওয়ার বাসনা রয়েছে। ২০২১-এ সে নিজে না হোক তার এক আত্মীয়কে জনপ্রতিনিধি করার জন্য এখন থেকেই সে লড়াই শুরু করেছে। তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি অশোক দাস বলেন, অবৈধ কাজের সঙ্গে যুক্ত কাউকে আমাদের দল সমর্থন করে না, করবে না। কেউ আইন বিরেধী কাজ করলে পুলিস তার ব্যবস্থা নেবে।