বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
আমলাশোল গ্রামটি বেলপাহাড়ি ব্লকের বাঁশপাহাড়ি পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। ২০০৪ সালে এই গ্রামে অনাহারে পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। ক্ষমতার পালাবদলের পর ধীরে ধীরে শুরু হয় উন্নয়ন। গ্রামটিতে ৭৮টি পরিবার রয়েছে। কয়েকটি শবর পরিবার থাকলেও অধিকাংশ পরিবারই মুণ্ডা সম্প্রদায়ের। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ন’লক্ষ টাকা খরচে ১৫টি সৌরচালিত পথবাতি বসানো হয়েছে। ১১ লক্ষ টাকা খরচে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের কাজের জন্য কংক্রিটের শেড তৈরি করা হয়েছে। সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ব্যয়ে আমলাশোল প্রাথমিক বিদ্যলয়ের সামনে খেলার মাঠ ও বাচ্চাদের জন্য পার্ক তৈরি করা হচ্ছে। যার ৪০ শতাংশ কাজ হয়েছে। তিন লক্ষ টাকা ব্যয়ে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কিচেন-কাম স্টোররুম তৈরি করা হয়েছে। আড়াই লক্ষ টাকা খরচে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সংস্কার করা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লাইব্রেরিও তৈরি করা হয়েছে। যার জন্য খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। ৩৮ হাজার টাকা খরচে ওই স্কুলে পরিস্রুত পানীয় জলের জন্য পাম্প ও খেলার সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকায় বিধায়ক তহবিল থেকে সাড়ে সাত লক্ষ টাকা ব্যয়ে কিছুদিনের মধ্যে অ্যম্বুলেন্স পরিষেবা চালু হয়ে যাবে। জঙ্গলমহল অ্যাকশন প্ল্যান থেকে ২০১৮-১৯ আর্থিক বর্ষে আমলাশোলের জন্য ৪৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। তারমধ্যে ১৫ লক্ষ টাকায় আমলাশোল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাসরুম সংস্কার করা হয়েছে। ২৩ লক্ষ টাকা খরচে পানীয় জলের জন্য পাম্প বসিয়ে ট্যাঙ্কের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহ করা হচ্ছে। সাড়ে ছ’লক্ষ টাকা খরচে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মডেল টয়লেট তৈরি করা হচ্ছে। যার ৮০ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। পাঁচ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আমলাশোলে আরও একটি পানীয় জলের পাম্প বসানো হয়েছে। লোধা-শবর উন্নয়ন প্রকল্পে ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা খরচে সাতজন বাসিন্দার বাড়ি সংস্কার করা হয়েছে। আবার বাংলা আবাস যোজনায় ৯ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে আটটি বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। একশো দিনের কাজের মাধ্যমে ১৬ লক্ষ টাকা খরচে আমলাশোল গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ঢালাই রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। জেলা পরিষদ থেকে ২২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৬০৪ মিটার রাস্তা তৈরি হয়েছে। বাড়ি বাড়ি জৈব সারের পিট তৈরির জন্য ৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
পরিকাঠামো উন্নয়ন ছাড়াও এলাকার মানুষকে ১০০ দিনের কাজ দেওয়ার পাশাপাশি ফলের বাগান, ছাগল ও হাঁস-মুরগি পালন এবং মাশরুম চাষের মাধ্যমে বিকল্প রোজগারের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। গত শনিবার আমলাশোলে পুষ্টি বাগানের সূচনা করেছেন জেলাশাসক আয়েষা রানি এ। এই প্রকল্পে ২১টি লোধা-শবর পরিবারের উঠোনে ১৪০০টি উন্নতমানের ফলের গাছ লাগানো হচ্ছে। প্রকল্পের জন্য ৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। গাছগুলি তিন বছর পর্যন্ত সরকারিভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। এরপর ফলন শুরু হয়ে যাবে। তখন ওই পরিবারগুলির আয়ের রাস্তা খুলবে। সার্বিক উন্নয়নে খুশি গ্রামবাসীরা। তাঁরা বলেন, গত দু’বছরে গ্রামে অনেক কাজ হয়েছে।