বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
প্রোমোটারদের একটা বড় অংশের বিরুদ্ধে কথা খেলাপের অভিযোগ বিস্তর। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ফ্ল্যাট তৈরি করা, নির্ধারিত সময়ে ফ্ল্যাটের পজেশন না দেওয়া, চুক্তি মেনে বকেয়া কাজ না করা, অথবা ফ্ল্যাটের মাপে গরমিল। সুপারবিল্ট, কার্পেট এরিয়ার মারপ্যাঁচে ক্রেতার কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগও চিরন্তন। সব মিলিয়ে চরম নাজেহালের মধ্যে পড়েন ক্রেতারা। এমন উদাহরণের সংখ্যা কম নয়। যেমন, চন্দননগরের বাসিন্দা সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়। মোটা অঙ্কের অগ্রিম দিয়ে একটি আবাসন প্রকল্পে ফ্ল্যাট বুক করেছিলেন তিনি। কিন্তু চুক্তিমতো ফ্ল্যাটের পজেশন দিতে টালবাহানা করেন প্রোমোটার। বাধ্য হয়ে ‘হীরা’র দ্বারস্থ হন সিদ্ধার্থবাবু। ‘হীরা’র কমিটির নির্দেশে ২৪ লক্ষ ৬২ হাজার ১৪৫ টাকা ফেরত পেয়েছেন তিনি। বুধবার সিদ্ধার্থবাবু বলছিলেন, ‘ক্রেতা-সুরক্ষায় হীরার ভূমিকা অনবদ্য। বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে দু’পক্ষকে নিয়ে শুনানি হয়েছে। নির্দেশ মেনে টাকা ফেরত দিয়েছেন প্রোমোটার।’ রাজারহাট নিউটাউনে ফ্ল্যাট কিনতে গিয়েছিলেন অরুন্ধতী দাস। অগ্রিম টাকা পেয়েও ফ্ল্যাট হস্তান্তর করতে গড়িমসি করছিলেন নির্মাণকারী সংস্থা। ‘হীরা’তে অভিযোগ জানিয়ে সুরাহা পান তিনিও। ফেরত পেয়েছেন ১৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। ‘হীরা’র হস্তক্ষেপে প্রোমোটারের সঙ্গে ঝামেলা মিটেছে বারাসতের প্রদীপ আগরওয়ালেরও। ২০১৭ সালে ‘হীরা’ আইন প্রণয়ন করে রাজ্য সরকার। টানা প্রায় দু’বছর অফিসারদের নিয়ে অথরিটির দায়িত্ব সামলেছেন আবাসন সচিব ওঙ্কার সিং মিনা। এই সময়ের মধ্যে অভিযোগ জমা পড়ে ৬৯৩টি। কঠোর হাতেই প্রায় প্রতিটি অভিযোগের সমাধান করেছে অথরিটি। এখন অভিযোগের বহর আরও বাড়ছে। বেড়েছে নির্মাণকারী সংস্থার রেজিস্ট্রেশনের হিড়িকও। সরকারের সাফ নির্দেশ, ‘হীরা’র রেজিস্ট্রেশন না থাকলে ফ্ল্যাটের কেনাবেচা অবৈধ। জানা গিয়েছে, এখন পর্যন্ত মোট ৯৩০টি সংস্থা ‘হীরা’তে নাম নথিভুক্ত করেছে। এর মধ্যে গত এক বছরেই নাম লিখিয়েছে ৪৮৮টি সংস্থা। ফলে অথরিটির দায়িত্ব ও চাপ বেড়েছে বহুগুণ। পরিস্থিতি সামাল দিতে অথরিটিতে চেয়ারপার্সন সহ দু’জন সদস্যকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় নবান্ন।
চেয়ারপার্সন হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সন্দীপন মুখোপাধ্যায়। সদস্য হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হরগোবিন্দ সিংকে। তৃতীয় জন তাপস মুখোপাধ্যায়। তিনি পূর্ত দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার ইন চিফ পদের দায়িত্বে ছিলেন।