নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আক্রান্তদের সুস্থ করার প্রক্রিয়ায় করোনা জয়ী যোদ্ধাদের যুক্ত করার অভিনব উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকে এই উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেন। করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিরা এবার থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে আক্রান্তদের মনের জোর বাড়াতে সাহায্য করবেন। প্রথম পর্যায়ে বহরমপুর হাসপাতালে সুস্থ হয়ে ওঠা ৬০ জন করোনা আক্রান্তকে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা হবে। এঁদের মধ্যে ১০ জন করে যুক্ত হবেন বহরমপুর এবং মালদহ হাসপাতালে। বাকি ৪০ জনকে আনা হবে কলকাতায়। তাঁরা শহরের বিভিন্ন করোনা হাসপাতালে যাবেন। স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করলেও রাজ্য সরকার তাঁদের সাম্মনিক ভাতা ও থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করবে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন সরকারি উদ্যোগে টেলি-মেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসা শুরু করার কথাও ঘোষণা করেছেন। প্রথম পর্যায়ে এটি কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের জন্য চালু হচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যে তা জেলাগুলিতেও চালু করা হবে। অনেকগুলি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল শুধু করোনা চিকিৎসার জন্য চিহ্নিত হওয়ায় সেখানে অন্য রোগের চিকিৎসা হচ্ছে না। ফলে সেই অঞ্চলের অনেক রোগী ওইসব হাসপাতালে আর পাঁচটি রোগের চিকিৎসা করাতে যেতে পারছেন না। তাঁদের চিকিৎসা পরিষেবা দিতেই বিশিষ্ট ডাক্তারদের দিয়ে টেলি-মেডিসিনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আপাতত ১২টি টেলিফোন নম্বর থাকছে। পরে জেলাগুলিকে এই ব্যবস্থার মাধ্যমে যুক্ত করার জন্য আরও লাইন বাড়ানো হবে।
বহরমপুর হাসপাতালে ভর্তি থাকা ৬০ করোনা রোগী সুস্থ হওয়ার পর নিজেরা একটা সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। নাম দেওয়া হয়েছে ‘কোভিড ওয়ারিয়ার্স ক্লাব’। মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন, এই ধরনের সংস্থা জেলায় জেলায় গড়ে উঠুক। সংস্থার সদস্যরা তাহলে আরও বেশি সংখ্যায় করোনা রোগীদের সুস্থ করার প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারবেন। করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন শোনার পরেই অনেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। তাঁদের মনোবল ফেরাতেই এই উদ্যোগ। বাস্তবে করোনা রোগীদের সিংহভাগই সুস্থ হয়ে ওঠেন। অনেককে অক্সিজেন দেওয়ারও প্রয়োজন হয় না।
এদিকে, করোনায় আক্রান্ত হলেন বারাসত পুরসভার প্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায়। সোমবার তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন বিকেলেই তাঁকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কয়েকদিন ধরেই তিনি জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। জ্বর ছাড়া আর কোনও উপসর্গ ছিল না। শনিবার তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল।
করোনাকে হারিয়ে সোমবার বাড়ি ফিরেছেন দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বরুণ নট্ট। তিনি বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। দমদম পুরসভা সূত্রে এখবর জানা গিয়েছে।