গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
রাজ্য বিজেপি নেতাদের উদ্দেশেও আঙুল তুলেছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। মমতা বলেন, ‘তিন মাস তো লুকিয়ে ছিলেন। ঘর থেকেও বেরননি ভয়ে। আর এখন আপনারা বড় বড় কথা বলছেন? সরকারকে কাজ করতে দিন।’
ঘূর্ণিঝড় উম-পুন সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে বাংলার। কেন্দ্রের অগ্রিম সাহায্য এসেছে এক হাজার কোটি টাকা। আর প্রায় দু’সপ্তাহ পর এল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। তাঁরা শনিবার ফিরে গিয়ে রিপোর্ট দেওয়ার পর পরবর্তী আর্থিক সাহায্য আসার কথা। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তদের জীবন তো থেমে থাকবে না। তাই রাজ্য সরকারও বসে নেই। এদিন অনুষ্ঠান থেকে সেকথা আবারও মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সাফ জানিয়েছেন, ‘আমরা আমাদের ক্ষুদ্র সামর্থ্য নিয়ে বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। একদিকে করোনা মহামারী চলছে, অন্যদিকে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যস্ত বাংলা। আমাদের এই দুটো দুর্যোগ আর দুর্ভোগের মোকাবিলা করতে হচ্ছে। কিন্তু আমরা হাল ছাড়িনি। তিন মাস ধরে রাস্তায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করে গিয়েছি।’ প্রতি মাসে রাজ্য সরকারের আয় হয় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। গত তিন মাস লকডাউন থাকায় তা হচ্ছে না। কিন্তু তাতেও ত্রাণের কাজে খামতি রাখা হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন মমতা। জানিয়েছেন, ‘আমরা ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত মানুষের জন্য ৬ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ছেড়েছি। ত্রাণ দিয়েছি, আরও দিচ্ছি। এত সমস্যা থাকা সত্ত্বেও আমরাই একমাত্র সরকার, যারা ১ তারিখ সরকারি কর্মচারীদের ১০০ শতাংশ বেতন দিয়ে যাচ্ছি। কারও বেতন কাটিনি।’
পরিযায়ী শ্রমিক প্রসঙ্গেও এদিন কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, ‘পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে চিৎকার করছে কেন্দ্র, কিন্তু এক পয়সা দিচ্ছে না। আমরা কিন্তু ইতিমধ্যেই ওদের জন্য ২০০ কোটি টাকা খরচ করেছি। পরিযায়ী শ্রমিকদের অবশ্যই ফিরিয়ে আনব। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার যেভাবে বিনা পরিকল্পনায় ওদের ছেড়ে দিচ্ছে, তাতে করোনা বাড়ছে। তার উপর শ্রমিকদের হাতে এক পয়সা দেওয়া হচ্ছে না। খাবারও জুটছে না ওদের।’
উম-পুনে প্রায় ১৬ হাজার গাছ উপড়ে গিয়েছে শহর কলকাতায়। সেই ক্ষত মেরামত হবে না। তবে চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। পরিবেশ দিবসে বৃক্ষরোপণের বার্তা দিতেই এদিন হরিশ পার্কে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে একটি ১০ বছরের নিমগাছ প্রতিস্থাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আরও জানান, ‘করোনার জন্য জমায়েত করা যাচ্ছে না। তাই আমরা ছোট করে একটা উদ্যোগ নিয়েছি। গোটা রাজ্যে আগামী কয়েক মাস ধরে বৃক্ষরোপণ চলবে।’ তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে পুরসভার পক্ষ থেকে ৫০ হাজার গাছ লাগানোর প্রতিশ্রুতি দেন প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমও। পাশাপাশি সুন্দরবন নিয়েও বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, বর্ষার সময় সুন্দরবনে ৫ কোটি ম্যানগ্রোভ প্রজাতির গাছ লাগাতে হবে। সেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি গোটা রাজ্যে সাড়ে তিন কোটি বৃক্ষরোপণের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। ‘সবুজ বাঁচান, প্রাণ বাঁচান’ বার্তাও শোনা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়।