পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
পরিযায়ী শ্রমিকরা বিপুল সংখ্যায় আসার আগে কোনও জেলাতেই তেমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি ছিল না। দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলায় অল্প কিছু করোনা রোগীর হদিশ মেলায় সাধারণ মানুষ কিছুটা স্বস্তিতে ছিলেন। কিন্তু, মহারাষ্ট্র সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে বাসে ও ট্রেনে পরিযায়ী শ্রমিকরা আসতে শুরু করার পর থেকেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা।
রবিবার বীরভূম জেলায় নতুন করে ২৮জন আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে রামপুরহাট মহকুমাতেই রয়েছেন ২৭জন। অপর একজন নানুর থানা এলাকার। এই নিয়ে রামপুরহাট মহকুমায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৯। জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৫৪। এনিয়ে প্রচণ্ড উদ্বেগে রয়েছেন স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তারা। জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বলেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সংখ্যার বিচারে বীরভূমের পরেই রয়েছে মুর্শিদাবাদ। এই জেলাতে নতুন করে ১৫জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। আক্রান্তদের মধ্যে খড়গ্রামের ৬জন, বেলডাঙা-২ ব্লকের ৩জন, ভরতপুর-২ ও নবগ্রাম ব্লকের ২জন করে এবং লালগোলার ১জন রয়েছেন। অন্য আরেকজন উপসর্গ নিয়ে আগে থেকেই কোভিড হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন। নবগ্রামের এক মহিলা এবং তাঁর তিন বছরের ছেলে আক্রান্ত হয়েছে। ওই মহিলার স্বামী ভিন রাজ্য থেকে ফিরে আগেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, আক্রান্তদের কোভিড হাসপাতালে এনে চিকিৎসা শুরু হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় বাঁকুড়া জেলায় আরও ৮জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল ৩৬। যদিও নতুন করে আক্রান্তদের বাড়ি কোথায় বা তাঁরা পরিযায়ী শ্রমিক, নাকি জেলাতে থেকেই আক্রান্ত হয়েছেন, সে বিষয়ে জেলা প্রশাসন বা স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। অন্যদিকে, আরও সাতজন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।
রবিবার নতুন করে আরামবাগ মহকুমার আরও চার জনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এর আগে মহকুমায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫০জন। সবমিলিয়ে এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪। এদিনের আক্রান্ত চারজনের বাড়ি গোঘাট-২ ব্লকের শ্যামবাজার এলাকায়। সম্প্রতি তাঁরা ভিন রাজ্য থেকে গ্রামে ফিরেছিলেন। যদিও এ ব্যাপারে প্রশাসনিক কর্তারা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
পুরুলিয়া জেলায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হলেন আরও ছ’জন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁরা সকলেই মহারাষ্ট্র থেকে ফিরেছিলেন। তাঁদের প্রত্যেকেই পুরুলিয়া-২ ব্লকের বাসিন্দা। এনিয়ে জেলায় মোট আটজন করোনায় আক্রান্ত হলেন।
নদীয়া জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হলেন আরও চারজন। এঁদের মধ্যে দু’জন তেহট্ট-১ ব্লকের বাসিন্দা। চাকদহের একজন এবং কালীগঞ্জ ব্লকের আরও একজন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানিয়েছে। তেহট্ট মহকুমায় করোনা আক্রান্ত দু’জনই পরিযায়ী শ্রমিক। এঁদের বাড়ি তেহট্ট ১ ব্লকের নওদাপাড়ায়। তাঁরা দু’জনেই কয়েকদিন আগে মহারাষ্ট্র থেকে বাড়ি ফিরে হোম কোয়ারান্টিনে ছিলেন। শনিবার রাতে তাঁদের রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর কল্যাণী কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়। এঁদের সংস্পর্শে আসা ১৬জনকে আইসোলেশনে পাঠানো হয়। কালীগঞ্জ ব্লকের রাধাকান্তপুরের এক পরিযায়ী শ্রমিকেরও করোনা ধরা পড়েছে। তিনিও কয়েকদিন আগে মহারাষ্ট্র থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন। এই নিয়ে নদীয়া জেলায় এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৭৬জন। গত সপ্তাহেই এক লাফে করোনা আক্রান্তর সংখ্যা এতটা বেড়ে গিয়েছে।