বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
জেলায় জেলায় এত সংখ্যক করোনা পজিটিভ আসার পরই পুলিস ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আক্রান্তদের এলাকা সিল করে কন্টেইনমেন্ট জোন করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে আক্রান্তদের সংস্পর্শে কারা এসেছে, তার তালিকাও তৈরি করছে স্বাস্থ্যদপ্তর। তাদের হোম কোয়ারেন্টাইন অথবা কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পাঠানো হবে।
এতদিন রাঢ়বঙ্গের জেলাগুলিতে করোনা সংক্রমণের ব্যাপকতা ছিল না। বিভিন্ন জেলায় অল্প সংখ্যক পজিটিভ কেস ছিল। তাও দেখা গিয়েছে, যাঁদের রিপোর্ট পজিটিভ তাঁদের সিংহভাগই কলকাতায় গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু লকডাউনের তৃতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন রাজ্য থেকে ট্রেনে করে এরাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকরা ফিরে আসার পর আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। অবস্থা এমন যে একদিনে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে ১৭জন, আরামবাগ মহকুমায় ১৩ জন, মুর্শিদাবাদ জেলায় ১৪জন আক্রান্ত হয়েছেন। তারপর থেকেই জেলায় জেলায় উদ্বেগ বাড়ছিল। পরিযায়ী শ্রমিক আসার সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়তে শুরু করে।
বৃধবার সেই সমস্ত হিসেবকেও টপকে গিয়েছে। বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, পুরুলিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, আরামবাগ মহকমা এলাকাতেই মোট ৮২জন আক্রান্তের হদিশ মিলেছে বলে বিভিন্ন জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। দু’একজন বাদ দিয়ে আক্রান্তদের সকলেই পরিযায়ী শ্রমিক। এরমধ্যে একদিনে বীরভূম জেলাতেই আরও ২৪ জন করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। শুধু রামপুরহাট মহকুমায় রয়েছে ২৩ জন। একজন বাদে সকলেই পরিযায়ী শ্রমিক। তারমধ্যে দু’জন নাবালক। একজন মহারাষ্ট্র বোর্ডের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। বুধবার সকালে সকলকেই বোলপুরের করোনা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে মুরারই-২ ব্লকে ৯ জন এবং নলহাটি-১ ব্লকের ৭জন। বাকিরা অন্যান্য ব্লকের।
পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও বুধবার মোট ১৮জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তারমধ্যে দু’ বছরের একটি শিশুও রয়েছে। ১৭ জনই ভিন রাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিক। ২ বছরের যে শিশুর করোনা ধরা পড়েছে তার বাবা-মাও পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁরা কাটোয়া, বর্ধমান শহর, কালনা, মেমারি, ভাতার, রায়না প্রভূতি এলাকার। তাঁরা মুম্বই, চেন্নাই, দিল্লি, রাজস্থান, আমেদবাদ প্রভৃতি রাজ্য থেকে ফিরেছেন।
নদীয়া জেলাতেও গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১২ জনের করোনা আক্রান্ত হওয়ার হদিশ মিলেছে। সেখানেও অধিকাংশই মহারাষ্ট্র ফেরত পরিযায়ী শ্রমিক। নতুন করে একাধিক ব্লকে প্রথম করোনা আক্রান্তর খবর মিলেছে। সকলকে কল্যাণীর কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঠিক একইভাবে বাঁকুড়া জেলার ছাতনায় ১২ জন পরিযায়ী শ্রমিক করোনা আক্রান্ত হয়েছে। এরআগে এই ব্লকেই দু’জন করোনা পজিটিভ ছিল। মঙ্গলবার রাতে মুম্বই থেকে আসা ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তাদের দুর্গাপুরের কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভিনরাজ্য থেকে ফেরা মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকারও সাতজন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। জলঙ্গি, ফরাক্কা, রঘুনাথগঞ্জ-২, সামশেরগঞ্জ ব্লকের বাসিন্দা তারা। বুধবার পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় নতুন করে পাঁচজনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। তারমধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরে তিনজন ও পশ্চিম মেদিনীপুরে দু’জন রয়েছে।
এবার গ্রিন জোন পুরুলিয়াতেও থাবা বসাল করানো। এই জেলায় মহারাষ্ট্র ফেরত এক পরিযায়ী শ্রমিক সহ মোট ২ জন করানোয় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। আরামবাগ মহকুমাতেও নতুন করে মহারাষ্ট্র ফেরত দু’জন পরিযায়ী শ্রমিকের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁরা খানাকুল-১ ব্লকের বাসিন্দা।