বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
মঙ্গলবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে জানান, ইতিমধ্যেই রাজ্যের ১০৩ টি পুরসভার মধ্যে ৯৪টি’তে বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরে এসেছে। বাকি নটি পুরসভায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে। সেই ৯টি পুরসভা হল, পুজালি, বজবজ, সোনারপুর-রাজপুর, হাবরা, অশোকনগর, গোবরডাঙা, বাদুড়িয়া ও হাসনাবাদ। ৯০ শতাংশ গ্রামীণ এলাকাতেই বিদ্যুৎ সংযোগ ফেরানো হয়েছে বলে বিদ্যুৎ দপ্তর রিপোর্ট দিয়েছে। উল্লেখ্য, সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার গ্রামীণ এলাকায় পুরোপুরি বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ এখনও শেষ করা যায়নি। এক্ষেত্রে জমে থাকা জলই প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবু বিদ্যুৎ সংযোগ ফেরাতে পর্ষদের কর্মীরা অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বলে বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভন দেব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন।
এদিকে সিইএসসি জানিয়েছে, কলকাতাতেও ৯৫ শতাংশ বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতের মধ্যেই ৯৭ শতাংশ বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ এসে যাবে বলে তাদের দাবি। রাজ্যে ৮৫ শতাংশ টেলি যোগাযোগও স্বাভাবিক হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্রসচিব জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জল সরবরাহও প্রায় সমস্ত জায়গায় স্বাভাবিক। কিন্তু তা সত্ত্বেও পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। সিইএসসির পক্ষ থেকে রাজ্যকে জানানো হয়েছে, দক্ষিণ পূর্ব কলকাতার সার্ভে পার্ক, রুবি এবং দক্ষিণ-পশ্চিম কলকাতার পাটুলি, নেতাজি নগর প্রভৃতি অংশে এখনও বিদ্যুৎ স্বাভাবিক করা যায়নি। এই কাজে সিইএসসি রাজস্থান থেকে টিম নিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছে। স্বরাষ্ট্র সচিব আরো জানান, ঘূর্ণিঝড়ে ৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৬ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৬টি জেলা। ৮ লক্ষ মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তারমধ্যে এখনও ৩ লক্ষ মানুষ ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন। তাঁদেরকে পর্যাপ্ত খাবার ও পানীয় জল সহ বিভিন্ন রকম ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে। রাজ্য সরকার বিস্তারিত ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করছে বলেও স্বরাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন।
ঘূর্ণিঝড়ের এই দুর্যোগের মধ্যে রাজ্য সরকারের উদ্বেগ বাড়ছে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে। বিভিন্ন রাজ্যের সংক্রামিত এলাকা থেকে অনেকগুলি ট্রেন রাজ্যে আসায় উদ্বেগ বাড়ছে সরকারের শীর্ষ কর্তাদের। স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, করোনা আক্রান্ত এলাকা থেকে লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক বাংলায় ফিরছেন, এটা আমাদের কাছে বড় সমস্যা। আমরা সকলের কাছে অনুরোধ করব, কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম যেন তাঁরা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেন। যাঁদের মধ্যে উপসর্গ নেই তাঁরা হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন। আর যাঁদের মধ্যে উপসর্গ দেখা দেবে তাঁদের লালা রস পরীক্ষার পর প্রটোকল অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করা হবে। তবে বিমানে যাঁরা আসবেন তাঁদের অন্তত সাতদিন হোটেল হোক বা সরকারি কোয়ারেন্টাইন হোক, নির্ধারিত স্থানে থাকতে হবে। ২২৫টি ট্রেন আসার কথা ছিল। তারমধ্যে ১৯টি ট্রেন ইতিমধ্যেই এসে গিয়েছে। আরও ২০৬টি ট্রেন আসছে। কয়েকটি রাজ্য ট্রেন পাঠানোর ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করছে, বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে কথাবার্তাও বলছেন।
জলমগ্ন খেজুরিতে চলছে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ। -নিজস্ব চিত্র