বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
রাজনৈতিক মহলের মতে, একদা মাওবাদীদের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী তথা পুলিসি সন্ত্রাস বিরোধী জনসাধারণের কমিটির মাথা ছত্রধর মাহাত মুক্তি পাওয়ার এক মাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আগামী দিনে জঙ্গলমহলের রাজনীতিতে এই ঘটনা বড়সড় প্রভাব ফেলতে পারে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালে, অর্থাৎ বাম আমলের দুটি মামলায় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লালগড় আন্দোলনের সময় ২০০৯ সালে জেলবন্দি ছত্রধর মাহাতর মুক্তির দাবিতে ২৭ অক্টোবর বাঁশপাহাড়ি স্টেশনে ভুবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেস আটকে চালক ও যাত্রীদের পণবন্দি করে জনসাধারণের কমিটি ও মাওবাদীরা। সেই সময় দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছিল। এই মামলায় সরাসরি ছত্রধরের যোগ না থাকলেও তাঁর ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ আছে।
পাশাপাশি, ওই বছরের ১৪ আগস্ট লালগড় থানার ধরমপুরে সিপিএম নেতা প্রবীর মাহাত’র নৃশংস খুনের মামলার তদন্ত করবে এনআইএ। এই মামলায় ছত্রধর প্রধান অভিযুক্ত। এতে ছত্রধর সহ মোট ৩১ জনের নাম রয়েছে এফ আই আরে।
প্রশ্ন হল, বেছে বেছে কেন এই দুটি মামলার তদন্তভার এনআইএ-কে দিল কেন্দ্রীয় সরকার? যুক্তি হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ওই নির্দেশিকায় বলেছে, দু’টি মামলার ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী) জড়িত। দুটি মামলাতেই দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাই তদন্ত করে মাওবাদীদের পাশাপাশি বাকি অভিযুক্তদের সাজা দিতেই এই পদক্ষেপ। তবে স্বরাষ্ট মন্ত্রকের এই যুক্তি মানতে নারাজ রাজনৈতিক মহল। তাদের মতে, এই মুহূর্তে জেল থেকে ছাড়া পাওয়া ছত্রধর এরাজ্যের শাসকদলের ঘনিষ্ঠ। তাই তাঁকে ও তৃণমূলকে ঘুরপথে বিপাকে ফেলতেই এই নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।
প্রশ্ন আসে এতে কেন্দ্রীয় সরকারের লাভ কোথায়? সাম্প্রতিককালে জঙ্গলমহলের রাজনৈতিক সমীকরণ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এখানে তৃণমূলের শক্তিক্ষয় হয়েছে। লাভবান হয়েছে বিজেপি। বিশেষ করে, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোট এবং ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের ফলাফলের নিরিখে। তাই একদা পুলিসি সন্ত্রাস বিরোধী জনসাধারণের কমিটির নেতা ছত্রধরকে নিয়ে এই দড়ি টানাটানি বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
তাছাড়া জঙ্গলমহলে মাহাত সম্প্রদায়ের ৩৫ শতাংশ ভোট রয়েছে। তেমনি ২৮ শতাংশ ভোট আছে আদিবাসীদের। সব রাজনৈতিক দলই ছত্রধরকে কব্জা করে সেই ভোট নিজের দিকে টানতে মরিয়া।