পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
লকডাউনের জেরে যে কোনওরকম জমায়েতের ক্ষেত্রে প্রশাসনের তরফে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ফলে বন্ধ রয়েছে সমস্ত পূজা-অর্চনা। মন্দিরগুলিতে নিত্যপুজো হলেও তা সাধারণ মানুষের জন্য নয়। এমনকী, সেখানকার মূল দরজাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ফলে পুরোহিতদের দক্ষিণার ভাঁড়ারে ইতিমধ্যেই টান পড়তে শুরু করেছে। তাঁদের দাবি, আগামী দিনগুলিতে তা বিভীষিকার পর্যায়ে পৌঁছতে পারে। তপন চট্টোপাধ্যায় নামে এক পুরোহিত জানিয়েছেন, পূজা-পার্বণ করেই তাঁর সংসার চলে। এটাই একমাত্র পেশা। দেশের সার্বিক পরিস্থিতির নিরিখে লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন তিনি। তাঁর মতে, মার্চ মাসের শেষ ভাগ থেকে নববর্ষের পূজার্চনার বিভিন্ন বরাত আসতে থাকে। প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ জন পরিচিত ব্যবসায়ী রয়েছেন, যাঁরা প্রতিবছর তপনবাবুকে দিয়েই তাঁদের দোকানের হালখাতা সারেন। কিন্তু এবছর সেই ব্যবসায়ীরা আগে থেকেই জানিয়ে দিয়েছেন, লকডাউন উঠলে তবেই হবে হালখাতা, নচেৎ নয়।
উল্লেখযোগ্যভাবে, এসময় গৃহস্থ কল্যাণের জন্য অনেক পরিবার বাড়িতেই পূজা-অর্চনার ব্যবস্থা করে। তবে করোনা আতঙ্কের জেরে আগামী বৈশাখে অনেকেই বাড়িতে পুরোহিত ডেকে পূজা-অর্চনার বিষয়টি স্থগিত রাখবেন। ফলে পেটের ভাতে টান পড়তে পারে পুরোহিতদের। গোপাল ব্যানার্জি নামে আর এক পূজারী জানিয়েছেন, দেশ লকডাউন হওয়ার আগে থেকেই নিত্য পুজোর জন্য বহু গৃহস্থ পরিবার তাদের ‘বাঁধা’ পুরোহিতকে আসতে নিষেধ করে দিয়েছে। অনেকেই সচেতনভাবে বাড়িতে কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না। ফলে করোনা আতঙ্কের এই ভয়াবহতার আগে থেকেই নিত্যদিনের রোজগার কমতে শুরু করেছে। যা এখন ‘শূন্য’তে গিয়ে ঠেকেছে। তাই নিত্যদিনের নুন-ভাত জোগাতে স্বল্প সঞ্চয়ে হাত পড়েছে গোপালবাবু সহ সমগ্র পূজারীমহলের। কিন্তু তাতেও কতদিন? এই প্রশ্ন দানা বাঁধতে শুরু করেছে তাঁদের মনে।
অপরদিকে, ময়দানের সমস্ত ফুটবল ক্লাবও বন্ধ। ফলে চিরাচরিত বার-পুজোর ক্ষেত্রেও ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। লকডাউনের মেয়াদ বাড়বে নাকি তা উঠে যাবে, তা নিয়ে জল্পনা চলছে দেশে। তবেই জল্পনার মধ্যে রোজগার সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে পুরোহিত সম্প্রদায়। আপাতত তাঁরা মন্ত্রপাঠ ভুলে নিত্যদিনের খাবার জোগাতেই মনোযোগ দিয়েছেন।