ব্যবসায় বাড়তি বিনিয়োগ প্রত্যাশিত সাফল্য নাও দিতে পারে। কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি শ্বাসকষ্ট ও বক্ষপীড়ায় শারীরিক ক্লেশ। ... বিশদ
প্রধানমন্ত্রী বার্তা দিয়েছিলেন, ঘরের আলো নিভিয়ে দীপ জ্বালাতে। কিন্তু কলকাতা, শহরতলি ও জেলার মানুষ তার সঙ্গে বাজিও জুড়ে নিলেন। রবিবার রাত ন’টা বাজতে না বাজতেই শহর, জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বাজি ফাটানোর ছবি ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। এমনকী ফেসবুকে লাইভও করেছেন কেউ কেউ। কালীপুজো কিংবা দীপাবলির পর চার মাস পেরিয়ে গিয়েছে। তারপর রবিবারের যে পরিমাণ বাজি ফেটেছে, তা বর্ষবরণের রাতকে প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে বলে অনেকেই মনে করছেন। বাজি ব্যবসায়ী সমিতি ও বিক্রেতারা স্বীকার করে নিয়েছেন, বাজি ফাটানোর নিরিখে ক্রিকেট কিংবা ফুটবল ম্যাচের সেলিব্রেশনকে ছাপিয়ে গিয়েছে রবিবারের রাত। সারা বাংলা আতশবাজি উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান বাবলা রায় বলেন, ঘটনায় আমরা লজ্জিত ও দুঃখিত। কারণ আতসবাজি জ্বালিয়ে করোনা ভাইরাসের মোকাবিলা করা যাবে না। বরং এই রোগে মৃত ব্যক্তি, এর বিরুদ্ধে লড়াই চালানো ডাক্তার, চিকিৎসাকর্মী এবং এই ভাইরাসের ধাক্কায় জীবিকা হারানো ব্যক্তিদের এতে অবজ্ঞাই করা হল। কিন্তু যে ঘটনা ঘটেছে তাতে আতসবাজি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক-কর্মচারী-ব্যবসায়ীদের যোগ নেই। এটা কোনও একটি সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটেছে। এবং এর জন্য দায়ী ওই সিদ্ধান্তই।
বড়বাজার ফায়ার ওয়ার্কস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন নারুলা বলেন, লকডাউন চলছে। ফলে গত কয়েকদিনে কোনও বাজি বিক্রি হয়নি। যে বাজি ফেটেছে, তা আগে থেকে লোকজনের কাছে ছিল। বড়বাজারের আতসবাজি ব্যবসায়ী মহম্মদ নাদিমের দাবি, সাপ্লাই বন্ধ থাকায় শহরতলি বা জেলার দোকানগুলিতে বাজি পৌঁছে দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। ফলে এই বাজি পুরনো স্টক, যা লোকজনের কাছে ছিল।
প্রতি বছর কলকাতার শহিদ মিনারে বাজিবাজার বসে। এছাড়াও টালা, তালতলা, যাদবপুর সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় বাজি মেলার আয়োজন হয়। তাছাড়া চম্পাহাটি, নুঙ্গি, বজবজ, মহেশতলা, বারাসাত, ডানকুনি সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই প্রচুর বাজি বিক্রি করা হয়। কালীপুজো, দীপাবলি ছাড়াও বাজি বিক্রি হয় বিয়ের অনুষ্ঠান, বর্ষবরণ, ফাইনাল ম্যাচ, ক্লাবের বাৎসরিক অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় বাজি বিক্রি হয়েছে, এমনটা মানতে নারাজ ব্যবসায়ীরা। বজবজ-মহেশতলা আতশবাজি শ্রমিক, কর্মচারী ও ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক শুকদেব নস্করের দাবি, বছরের বিভিন্ন সময়ে বাজি বিক্রি হয় ঠিকই। কিন্তু লকডাউনে বাজি বিক্রি হওয়ার কোন সুযোগ নেই। প্রচুর আতসবাজি জ্বালানো হয়েছে, এ খবর আমরা পেয়েছি। কিন্তু তা মানুষজনের কাছে আগে থেকে ছিল। কালীপুজার সময় রয়ে যাওয়া স্টক ক্লিয়ার হল। প্রদেশ আতসবাজি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব কাজি বলেন, অনেক সময় দেখা যায় পাড়ার ছোট ছোট দোকানদারদের কাছে কিছু বাজি থেকে যায়। পরের বছরের জন্য তাঁরা মজুদ করে রাখেন। কিন্তু লকডাউনে সেই দোকানদাররা বাজি বিক্রি করেছেন, এমন সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। বাজি বিক্রির সুযোগ নেই। পুলিসের গাড়ি অহরহ টহল দিচ্ছে বলে জানান চম্পাহাটি বাজি ব্যবসায়ী সমিতির কর্মকর্তা শঙ্কর মণ্ডল।ফলত, রবিবারের রাতের ঘটনায় নিজেদের কাঁধ থেকে দায় ঝেরে ফেলেছেন বাজি বিক্রেতারা। ঠিক মত রাখতে পারলে বাজি এক বছরের বেশি সময়ও ঘরে স্টক করে রাখা যায় বলে দাবি তাঁদের।