ব্যবসায় বাড়তি বিনিয়োগ প্রত্যাশিত সাফল্য নাও দিতে পারে। কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি শ্বাসকষ্ট ও বক্ষপীড়ায় শারীরিক ক্লেশ। ... বিশদ
কেন্দ্রীয় বোর্ডটির দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষা ছিল ১৯ মার্চ। কিন্তু ১৮ মার্চ রাতে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তা স্থগিত করা হয়। ১ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়, সেই পরীক্ষা আর হবে না। শুধু সেটাই নয়, কোনও আঞ্চলিক ভাষার পরীক্ষাই আর নেওয়া হবে না। এগুলির মূল্যায়ন কীভাবে করা হবে, তা পরে জানানো হবে। আঞ্চলিক ভাষা বাদ গেলেও হিন্দিকে কিন্তু বাদ দেওয়া হয়নি। ইলেকটিভ এবং কোর, হিন্দির দু'টি পেপারই কিন্তু পরীক্ষা হবে। ইংরেজি অবশ্য আগেই হয়ে গিয়েছে। বিজ্ঞান এবং বাণিজ্য শাখার বেশ কিছু পরীক্ষাও পরে নেওয়া হবে।
এখানেই প্রশ্ন উঠছে। বাকি সব পরীক্ষাই যেখানে নেওয়া যাচ্ছে, সেখানে বাংলা বা অন্য আঞ্চলিক ভাষারপত্রগুলি বাদ যাবে কেন? সিবিএসই দশম পরীক্ষায় রাজ্যের মধ্যে চতুর্থ স্থানাধিকারী অস্ত্যর্থা দাস এবার দ্বাদশ শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষা দিচ্ছে। তাঁর কথায়, ভাষাপত্রগুলি সব বাদ গেলে বলার কিছু ছিল না। কিন্তু বাংলা আমার নিজের ভাষা। ইংরেজি দিয়েছি। হিন্দি যাদের দ্বিতীয় বা প্রথম ভাষা তারাও দিতে পারবে। কিন্তু আমি বাংলা পরীক্ষা দিতে পারব না।
মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারি স্কুল বোর্ডের এই সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক বলে মনে করি। এতে হিন্দি ভাষাভাষী ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে অন্যান্যদের একটা বৈষম্যও সৃষ্টি করা হচ্ছে। নিজের ভাষার পরীক্ষা না দিতে পারলে ছাত্রছাত্রীদের মনেও বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক অরূপকুমার দাস বলেন, এটা যে অপ্রত্যাশিত, তা নয়। স্বাধীনতার পর থেকেই হিন্দিকে রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদা দেওয়ার একটা চেষ্টা রাজনীতির নীতি নির্ধারকদের মধ্যে রয়েছে। দক্ষিণ ভারতীয়, বিশেষ করে তামিলদের প্রতিরোধে তা করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু হিন্দির আধিপত্য আরোপের চেষ্টা প্রায়ই প্রকাশ পায়। এটাও তার একটা উদাহরণ। এই বিপর্যয়ের মধ্যে হিন্দি বা অন্যান্য পরীক্ষাগুলিতেও কাটছাঁট হলে বলার কিছু ছিল না। তা কিন্তু হয়নি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে তারা বাদ দিতে চেষ্টা করেছে। হিন্দির ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা মনে হয় সবচেয়ে বেশি। আর আঞ্চলিক ভাষা বাদ দিলে অনেকটা দিন বাঁচানো যাবে বলে তারা মনে করেছে। এই দুর্যোগে সেটা খুব অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে না। কিন্তু সব পরীক্ষা নিতে পারলেই সেটা আদর্শ হতো। এই বিষয়গুলির মূল্যায়ন কীভাবে হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।