বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
পয়লা বৈশাখে কাকভোর থেকেই দেখা যায় মন্দিরে মন্দিরে ভিড়। লক্ষ্মী-গণেশের মূর্তি, ব্যবসার খাতা, পুজোর ডালা নিয়ে হাজির ছোট-বড় ব্যবসায়ীরা। কম্পিউটারের যুগেও হিসেবের খাতাটা নিয়ে একবার হলেও ঢুঁ দেন মন্দিরে। কিন্তু ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার, ফলে মন্দির বন্ধ। পুজো দিতে যাওয়ার সুযোগ নেই ব্যবসায়ীদের কাছে। এই অবস্থায় ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, লকডাউন উঠে গেলে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন খাতা পুজো করা যাবে। ফেডারেশন অফ ট্রেড অর্গানাইজেশনের বড়বাজার শাখার সম্পাদক তাপস মুখোপাধ্যায় বলেন, পয়লা বৈশাখে এবার খাতা পুজো করার কোনও সুযোগ নেই। ফলে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে ২৬ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ার দিকেই। যদি লকডাউন উঠে যায়, তাহলে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন পুজো করা হবে। প্রায় একই বক্তব্য পোস্তা মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ আগরওয়ালের। তিনি বলেন, এবছর পয়লা বৈশাখে অনেকেই পুজো করতে পারছেন না। কয়েকজন ব্যবসায়ী পরের অন্য কোনও দিনে পুজো করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর কয়েকজন বাড়িতে ঘরোয়াভাবে পুজো করার পরিকল্পনা করেছেন।
এ বছর পয়লা বৈশাখে প্রসিদ্ধ কালী মন্দিরগুলি বন্ধ থাকছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। ফলে এখনও সাধারণের প্রবেশ যেমন বন্ধ রয়েছে, তেমনটাই থাকবে ১৪ এপ্রিল। দক্ষিণেশ্বর মন্দির কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা কুশল চৌধুরী বলেন, পয়লা বৈশাখে প্রতিবছরই লক্ষাধিক মানুষের ভিড় হয়। ওই দিন নিয়ে বাঙালির আলাদা ধর্মাবেগ রয়েছে। কিন্তু এবছর নিরাপত্তার বিষয়টি সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। লকডাউনের দুদিন আগে থেকেই মন্দির বন্ধ এবং তা ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত থাকবে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কালীঘাট মন্দির কমিটির সহ-সভাপতি বাবলু হালদার বলেন, পয়লা বৈশাখে ২৪ ঘণ্টা মন্দির খোলা ছিল গত বছর। এবছর মন্দির খোলা রাখার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। প্রচুর মানুষ ফোন করে জানতে চাইছেন। কিন্তু সকলকেই নিরাশ করতে হচ্ছে। খাতা পুজোর বিষয়ে মতামত দিয়েছেন তারাপীঠ মন্দির কমিটির সম্পাদক ধ্রুব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, প্রতি বাড়িতেই প্রতিদিন পুজো হয়। ফলে ব্যবসায়ীরা পয়লা বৈশাখের দিন খাতা নিয়ে ঘরের ঠাকুরকে পুজো দিন। লকডাউন উঠলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর ওই খাতাটি মন্দিরে ছুঁয়ে নিয়ে যাবেন। পুরোহিতদের কাছেও ব্যবসায়ীরা ফোন করে জানতে চাইছেন লকডাউনের পরিস্থিতিতে কীভাবে খাতা পুজো করা যাবে। পুরোহিতদের বার্তা, মন্দির বন্ধ থাকায় বাড়িতেই ঘরোয়াভাবে পুজো করুন। শরীর সুস্থ থাকলে ব্যবসা-বাণিজ্য করার অনেক সময় পাওয়া যাবে।-নিজস্ব চিত্র