ব্যবসায় বাড়তি বিনিয়োগ প্রত্যাশিত সাফল্য নাও দিতে পারে। কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি শ্বাসকষ্ট ও বক্ষপীড়ায় শারীরিক ক্লেশ। ... বিশদ
এদেশে টিভি দেখার বিষয়ে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য তথ্য সরবরাহ করার দাবিদার ব্রডকাস্ট অডিয়েন্স রিসার্চ কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া বা বার্ক। তারাই একটি সমীক্ষা চালায় টিভি’র ভিউয়ারশিপ নিয়ে। সেই সমীক্ষায় তারা লকডাউনের প্রথম সপ্তাহের হিসেব দিয়েছে। তাতে বলা হচ্ছে, ২১ থেকে ২৭ মার্চের মধ্যে দেশের মানুষ টিভি দেখেছেন প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি মিনিট। এটাই নাকি রেকর্ড। ঠিক তার আগের সপ্তাহ থেকে ৩৭ শতাংশ বেশি। আগে যেখানে দর্শক দিনে গড়ে ৩ ঘণ্টা ৪৬ মিনিট টিভি দেখতেন, এখন সেখানে ৪ ঘণ্টা ৩৯ মিনিট টিভির সামনে কাটাচ্ছেন। আগে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে গড়ে ১৬টি চ্যানেল দেখতেন দর্শকরা। এখন তা বেড়ে ২২টিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।
আচমকাই পুরুষরা বেশি করে টিভিমুখো হয়েছেন, বলছে সমীক্ষা। যেখানে ৩৩ শতাংশ মহিলা টিভি দেখেন, সেখানে পুরুষ দর্শকের সংখ্যা ঠেকেছে ৪১ শতাংশে। যেখানে দর্শক সম্পর্কিত আগের সব হিসেব উল্টেপাল্টে গিয়েছে, সেখানে কী এমন টিভিতে দেখছেন সাধারণ মানুষ, যাতে তাঁরা মশগুল হয়ে আছেন? হিসেব বলছে, সবচেয়ে বেশি দর্শক টানছে নিউজ চ্যানেল। প্রায় ৩০০ শতাংশ দর্শক বেড়ে গিয়েছে সেখানে। করোনা নিয়ে সবসময় আপডেট থাকতে এখন এটাই হাতিয়ার। সিনেমা দেখার ক্ষেত্রে দর্শক বৃদ্ধির হার ৫৬ শতাংশ। তবে এই বাজারে দশ গোল খেয়েছে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান, যার আওতায় পড়ে মূলত টিভি সিরিয়ালগুলি। হিসেব বলছে, সেখানে দর্শক বেড়েছে মাত্র তিন শতাংশ। যেহেতু দেশজুড়ে শ্যুটিং বন্ধ, তাই থমকে গিয়েছে সিরিয়ালের কাহিনী। পুরনো গল্প দেখে আর মন ভরছে না দর্শকের। সেই কারণেই রিমোটের রাশ এখন ঘরে থাকা পুরুষের হাতে, ইঙ্গিত দিয়েছে সমীক্ষা।
কখন বেশি টিভি দেখেন দর্শক? হিসেব বলছে, সন্ধ্যার পর থেকে রাতে খাওয়ার আগে পর্যন্ত সময়টুকুতেই চালু থাকে টিভি। কিন্তু সেই হিসেবও উল্টেপাল্টে দিয়েছে করোনা। এখন দর্শক যখন তখন টিভি খুলে বসছেন। ৭০ শতাংশ দর্শক বৃদ্ধি হয়েছে নাকি ‘অসময়ে’র অনুষ্ঠানেই।
সমীক্ষা বলছে, টানা সময় ধরে একটি নির্দিষ্ট চ্যানেলে মন বসাতে পারছেন না দর্শক। বারবার পিছলে যাচ্ছে চ্যানেল। কখনও খবর, কখনও গানবাজনা, আবার কখনও নিদির্ষ্ট চ্যানেলে চিতার লাফালাফি বা সিংহের খুনসুটি। এর পাশাপাশি ভালো বিরিয়ানি রান্না করা যায় কীভাবে, তাই টিভি দেখে ঝালিয়ে নিচ্ছেন দর্শক। মোট কথা, টিভিতে কোনও কিছুই আর ফেলনা নয়। অফুরান-অলস সময় কাটাতে শিশুদের চ্যানেলও খুব মনে লেগেছে দর্শকের, বলছে সমীক্ষা। আতঙ্কের দিন যাপনে ছোটবেলার দিনগুলিতে ফিরতে চাইছেন অনেকেই।