পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
কয়েক হাজার ফুল-ফলের গাছের এক সাজানো বাগান রয়েছে ঐতিহ্যবাহী বিধানসভা ভবন চত্বরে। কলকাতার যে ক’টি হাতেগোনা এমন বাগান রয়েছে, তার মধ্যে এটি অন্যতম। কিন্তু নিয়মিত পরিচর্যার অভাবে এই বাগান এখন কার্যত ধুঁকছে। বাগানকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসেন যিনি, সেই ‘একা কুম্ভ’ কেয়ারটেকার নজিবুদ্দিন কোনওক্রমে একজন মালিকে দু’দিন আগে আনিয়েছেন বিধানসভার এমার্জেন্সি গাড়ি ব্যবহার করে। তবে কয়েক একর জমির উপর ব্রিটিশ আমলে তৈরি এই বাগানের সব গাছে জল-সার দেওয়া একজন মালির পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। নজিব নিজে একজন ফরাস কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে সাহায্য করলেও সামাল দিতে পারছেন না। ফলে প্রখর গ্রীষ্মের আবহে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বেশ কিছু গাছের মরে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ফুলে-ফলে ভরা এই বিশাল বাগান তাঁরও ভীষণ সাধের। গ্রামীণ পরিবেশে বড় হয়ে ওঠা বলে সবুজের প্রতি আকর্ষণ তাঁর বরাবরের। তাই লকডাউনের বাজারেও নিস্তব্ধ বিধানসভা ভবনের বাগানের খোঁজ রাখছেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিচর্যার অভাবে গাছের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন তিনিও। যোগাযোগ করা হলে বিমানবাবু বলেন, বিষয়টি সত্যিই চিন্তার। এত ভালো এবং রকমের গাছের সম্ভার খুব কম দেখা যায়। আমি নিজে বরাবর এই বাগান নিয়ে খোঁজ নিই। লকডাউনের কারণে মালিরা সব আটকে থাকায় পরিচর্যা সম্ভব হচ্ছে না। কী করা যাবে আর।
কেয়ারটেকার নজিবুর তাঁর এত বছরের চাকরি জীবনে এমন পরিস্থিতি কখনও দেখেননি। অনেক ধর্মঘট, পরবের ছুটি দেখেছেন। কিন্তু এভাবে ভবনের সব কিছু কাজ স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা তাঁর নেই। তাঁর কথায়, বাগানের জন্য ১৪ জন মালি রয়েছেন এখন। কিন্তু লকডাউনের আগে অধিবেশন শেষ হতেই সকলেই ওড়িশা বা দক্ষিণ ২৪ পরগনার দেশের বাড়ি চলে যায়। হঠাৎ করে লকডাউন হওয়ায় ইচ্ছা থাকলেও তারা আর কেউ ফিরতে পারেননি। দিন দুই আগে একজন মালি তাঁর এক আত্মীয়ের বাড়িতে পাইকপাড়ায় রয়েছেন জেনে গাড়ি নিয়ে তাঁকে নিয়ে এসেছি। একজন ফরাসকে আমার সঙ্গে ভবনেই রেখে দিয়েছি লকডাউনের সময় থেকেই। কীভাবে, কত গাছকে রক্ষা করা যায়, এখন সবাই মিলে সেই চেষ্টা করছি। কিন্তু এত বড় বাগানে শেষ পর্যন্ত কতটা পেরে উঠব, তা জানি না। অধ্যক্ষ এনিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন। আসলে উনি বরাবরই বাগান-প্রিয়। গাছ ওঁর কাছে প্রাণ।