পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
পেশা মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। বছরভর রোগীদের কেস হিস্ট্রি নাড়াচাড়া করাই কাজ। করোনা যুদ্ধে তাঁদের নজরে এসেছে, মানুষের মনে আতঙ্ক যেন কামড়ে বসেছে। তা সরিয়ে মানসিক চাপ মুক্ত করতে চান চিকিৎসকরা। কিন্তু গণপরিবহণ মাধ্যম বন্ধ থাকায় রোগীর পক্ষে চিকিৎসকের কাছে আসা এখন সম্ভব নয়। তাই বাড়িতে থেকেই যাতে সমস্যার সমাধান হয়, তার জন্য অনলাইন ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাকে হাতিয়ার করেছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা। কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে টেলিমাইন্ড। বার্তা, স্টপ প্যানিক। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চিকিৎসকদের ফোন করতে পারবেন সাধারণ মানুষ। কোন সময় কোন চিকিৎসক থাকবেন, তার তালিকা তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের ফোন নম্বর। প্রতিদিনই শতাধিক ফোন আসছে বলে জানান তাঁরা। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ বৈদ্যনাথ ঘোষ দস্তিদার বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় সচেতনতামূলক প্রচার করা হচ্ছে। মানুষজনকে বলা হয়েছে, ফোন করুন। মানসিক চাপ কাটিয়ে তোলার অবশ্যই চেষ্টা করব। প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হবে। একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিনই চিকিৎসকদের কাছে প্রচুর ফোন আসছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঘটনাও ঘটেছে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ রাজশ্রী রায় বলেন, আমরা যে গ্রুপ করেছি, তাতে এক চিকিৎসকের কাছে একই পরিবারের তিনজন ফোন করেছেন। শাশুড়ি, বউমা, ছেলে। কেউ করোনা আক্রান্ত নন। কিন্তু আতঙ্কে কার্যত দিশাহারা অবস্থা। ওই তিনজনকেই আলাদা সময় দিয়ে কাউন্সেলিং করেছেন চিকিৎসক। টেলিফোনের মাধ্যমে তাঁদের মানসিক চাপ কাটাতে প্রয়োজনীয় পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
তবে এই টেলিমাইন্ড ব্যবস্থায় কোনও পারিশ্রমিক নিচ্ছেন না চিকিৎসকরা। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ গৌতম সাহা বলেন, ভয়, আতঙ্ক, মানসিক চাপ, উদ্বেগ, বিষন্নতা কাটানোই মূল লক্ষ্য। আগে মানুষকে সুস্থ করি। এখানে টাকা-পয়সার কোনও প্রশ্ন নেই।চিকিৎসকদের নজরে এসেছে, নতুন রোগী যেমন ফোন করছেন। তেমনই করোনা আতঙ্কে কোনও কোনও রোগীর পুরনো রোগের লক্ষণও আবার ফিরে আসছে। ৫০ জন ডাক্তার রয়েছেন এই টিমে। প্রতিদিনই তাঁরা ফোন, ভিডিওকল, হোয়াটসঅ্যাপ ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষকে সুরাহা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। রোগীর কেস হিস্ট্রি শুনে কাউন্সেলিং করা হচ্ছে। সমস্যা গুরুতর হলে তাঁর বাড়ির কাছাকাছি কোন চিকিৎসককে পাওয়া যেতে পারে, সেই পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। এই টেলিমাইন্ড ব্যবস্থায় চিকিৎসকরা বার্তা দিয়েছেন, বাইরে না বেরিয়ে সকলেই পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান। যোগ, প্রাণায়াম করুন। বাচ্চাদের সঙ্গে লুডো, কাটাকাটি খেলুন। বয়স্ক মানুষদের সঙ্গে গল্প করুন। বাড়ির কাজে হাত লাগান। আরও বার্তা, খবর দেখে আপডেট থাকুন। কিন্তু তার সঙ্গে গান শুনুন, সিনেমা দেখুন, বই পড়ুন, ছবি আঁকুন, বাড়ির ছাদে হাঁটাহাঁটি করুন। তাতে দেখবেন মনটা অনেক শান্ত থাকবে।