রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
বৃহস্পতিবার ধীমানবাবু, বিশিষ্ট গ্যাসট্রোএনটেরোলজিস্ট ডাঃ অভিজিৎ চৌধুরী, স্বাস্থ্য দপ্তরের বিশেষ সচিব ডাঃ তমালকান্তি ঘোষ প্রমুখ সাংবাদিক সম্মেলন করার পর এক ঘণ্টা হতে না হতেই রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা ফের একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন। তিনি ব্যাখ্যা দেন, আক্রান্তের সংখ্যা ৫৩ হলেও বাস্তবে অ্যাকটিভ নোভেল কেস-এর সংখ্যা ৩৪। তাঁর ব্যাখ্যা, ৫৩ জন করোনা পজিটিভের মধ্যে তিনজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তাতে সংখ্যাটি কমে হয়েছে ৫০। আইডিতে ভর্তি করোনা পজিটিভ রোগীদের দ্বিতীয়বারের পরীক্ষায় বৃহস্পতিবার ন’জনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তাঁদের শুক্রবার ছেড়ে দেওয়া হবে। ফলে অ্যাকটিভ কেস আরও কমে হল ৪১। আবার এই ৪১ জনের মধ্যে করোনা আক্রান্ত তিনজন মারা গিয়েছেন। সংখ্যাটা আরও কিছুটা কমে হল ৩৮। এই ৩৮-এর মধ্যে আবার আরও চারজনের নাম ছিল, যাঁরা অন্য উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে মারা গিয়েছেন। মৃত্যুর পর তাঁদের দু’জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল। তবে তাঁরা সকলেই করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন কি না, সেই সত্য এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তাই মোট অ্যাকটিভ কেস হল ৩৪। রাজ্য প্রশাসনের সদর কার্যালয় থেকে মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে দু’রকম তথ্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। আসলে সরকার প্রকৃত তথ্য গোপন রাখতেই এই পথের আশ্রয় নিচ্ছে—এই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি সহ বিরোধী দলগুলি।
এদিকে, বিভিন্ন হাসপাতাল এবং জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আরও কমপক্ষে ১৫ জন নতুন করে আক্রান্ত হওয়ায় এই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫৮। গভীর রাতে এই সংখ্যাটি আরও বাড়তে পারে। এর মধ্যে রয়েছেন কালিম্পংয়ের সেই মৃতার সংস্পর্শে আসা ছ’জন প্রতিবেশী। এছাড়াও কলকাতা পুরসভার বরো ১’র ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক কন্ট্রাক্টর, সল্টলেক করুণাময়ী এলাকা এবং তমলুকের তিন ব্যক্তি সহ মোট পাঁচজন আক্রান্ত ভর্তি আছেন ই এম বাইপাস লাগোয়া অ্যাপোলো হাসপাতালে। এছাড়াও মঙ্গলবার সল্টলেকের ইই ব্লকের বাসিন্দা এক ব্যক্তি তাঁর বাবাকে হৃদরোগ এবং অন্যান্য সমস্যা নিয়ে কলম্বিয়া এশিয়া হাসপাতালে আসেন। বৃহস্পতিবার তাঁর বাবার রিপোর্টে করোনা পরীক্ষা রিপোর্ট পজিটিভ মিলেছে। ছেলে সহ পরিবারের দু’জনকে নিউটাউনে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। অ্যাপোলো’র সিইও রানা দাশগুপ্ত জানান, করোনা আক্রান্ত এবং উপসর্গ থাকা রোগীদের জন্য তাঁদের কোভিড ওয়ার্ড কাণায় কাণায় পূর্ণ। তার মধ্যেই দু’জন পুরনো এবং নতুন পাঁচজন করোনা রোগী ভর্তি আছেন। এছাড়াও নাগেরবাজারের আইএলএস হাসপাতালে নতুন করে আক্রান্ত খড়দহ ও মধ্যমগ্রাম বিটি কলেজ এলাকার দুই বাসিন্দা ভর্তি আছেন বলে সেখানকার সিইও নিবেদিতা চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন।
জেলা সূত্রের খবর, পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক থানার বল্লুক গ্রামের পান ব্যবসায়ী এক বৃদ্ধ কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি হন ৩১ মার্চ। গতকাল তাঁর করোনা পরীক্ষা হয়। সেই রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে বলে জানান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ নিতাইচন্দ্র মণ্ডল। আক্রান্ত বৃদ্ধের ছেলেও অসুস্থ হয়ে একই হাসপাতালে ভর্তি। তমলুক জেলা হাসপাতালের এক চিকিৎসক তাঁর প্রাইভেট চেম্বারে এই বৃদ্ধের চিকিৎসা করায় তাঁকে এবং আক্রান্তের পরিবারের সদস্য মিলিয়ে ১৬ জনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। এদিকে, করোনা সংক্রমণে মৃত বেলঘরিয়ার রথতলার সেই ব্যবসায়ীর বাড়ির অংশ এবং গোটা এলাকা জীবাণুনাশক দিয়ে স্প্রে করা হয়েছে। এলাকাবাসীদের বাড়ি থেকে বের হতেও নিষেধ করা হয়েছে।