বাংলা নিউজ এজেন্সি: দিল্লির নিজামুদ্দিনে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া এবং মুর্শিদাবাদ,শিলিগুড়ি এবং দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে অন্তত ৩১ জন যোগ দিয়েছিলেন বলে প্রশাসনের কাছে প্রাথমিক খবর এসেছে। এর মধ্যে শুধু পূর্ব মেদিনীপুরেরই ১২ জন রয়েছেন। এছাড়া পশ্চিম মেদিনীপুরের ৯জন, কাটোয়ার পাঁচজন, মুর্শিদাবাদের দু’জন এবং শিলিগুড়ির একজন এবং দক্ষিণ দিনাজপুরের দু’জন রয়েছেন। প্রসঙ্গত, ওই দু’জনকেই কোয়ারেন্টাইনে পাঠাতে হয়েছে। এদিকে এই সময়ের মধ্যে আসানসোলে একটি ধর্মীয় সভায় যোগ দেওয়া ৩০ জন বিদেশিকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তাঁরা দিল্লির নিজামুদ্দিন থেকে এসেছিলেন কিনা তা খোলসা করে না বলায় সন্দেহ বাড়ছে প্রশাসনের।
পূর্ব মেদিনীপুরে কয়েকজনের নাম ও ফোন নম্বর জেলা প্রশাসনের কাছে আসায় বুধবার সকাল থেকে ফোন করে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন ব্লক ও মহকুমা প্রশাসনের অফিসাররা। কয়েকজন রং নম্বর বলে ফোন কেটে দিয়েছেন। হলদিয়া পুরসভার দেভোগ এলাকার একজনকে খুঁজে বের করা গিয়েছে। ওই ব্যক্তি এবং তাঁর সঙ্গে মেলামেশা করা চার সঙ্গীকে এদিনই হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি করা হয়। পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েকজন নিজামুদ্দিনের ধর্মীয় সভায় গিয়েছিলেন। এদিন জেলাশাসক পার্থ ঘোষ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডলকে ডেকে পাঠিয়ে এব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নেন। জেলাশাসক বলেন, পাঁচজনকে চিহ্নিত করে হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকেও নিজামুদ্দিনে অংশ নেওয়া ন’জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হল, ন’জনের মধ্যে সাতজন আবার ইন্দোনেশিয়ার বাসিন্দা। তাঁরা খড়্গপুর শহরের এক জায়গায় আছেন। এছাড়াও জেলার দু’জন বাসিন্দাকে শনাক্ত করা গিয়েছে। জেলা প্রশাসন ও পুলিস ওই ন’জনকে খুঁজে বের করেছে। আপাতত তাঁদের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখা হয়েছে। পুলিস সুপার দীনেশ কুমার একথা জানিয়েছেন।
পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া শহরেরও পাঁচজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। মুর্শিদাবাদ থেকেও দু’জন ওই ধর্মীয় সভায় গিয়েছিলেন। তাঁরা অবশ্য গত ১১ মার্চই ফিরে এসেছেন বলে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্যআধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস জানিয়েছেন। অন্যদিকে শিলিগুড়ির গোয়ালাপাড়ার একজনকে চিহ্নিত করে এদিন কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়।
এদিকে লকডাউন চলাকালীন আসানসোলেও একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে জমায়েত হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার খবর পেয়ে আসানসোল উত্তর থানার পুলিস সেখানে গিয়ে ১৯ জন বাংলাদেশি, ১১ জন ইন্দোনেশিয়ার ও তিনজন অসমের বাসিন্দাকে কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। তাঁরা দিল্লি ঘুরে এখানে এসেছিলেন কিনা তা নিয়ে কেউ স্পষ্ট করে কিছু না বলায় প্রশাসন সংশয়ে রয়েছে। যদিও আয়োজকদের দাবি, কোনও জমায়েত হয়নি। এ ব্যাপারে স্থানীয় ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার হাজি নাসিম আনসারি বলেন, বহিরাগতরা নজরে পড়তেই পুলিস ও প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। তারাই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, কিছু বিদেশিকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তাঁদের উপর প্রয়োজনীয় নজরদারি করা হচ্ছে।