প্রসেনজিৎ কোলে, কলকাতা: দেশজুড়ে লকডাউন এর জেরে বন্ধ বিভিন্ন অফিস, দোকান, রেল ও বিমান পরিষেবা। এই পরিস্থিতিতে একেবারে গরিব মানুষকে মুখে অন্ন তুলে দিতে বিস্তারিত পরিকল্পনা করেছে ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ক্যাটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম কর্পোরেশন লিমিটেড। সূত্রের খবর, রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের নির্দেশমতো গোটা পরিকল্পনাটি করা হয়েছে। সেই অনুসারে অত্যন্ত গরিব মানুষজনকে রান্না করা খাবার দেওয়া হবে কাগজের প্লেটে। মূলত যেখানে বেস কিচেন রয়েছে আইআরসিটিসির, সেই সব জায়গাতেই এই পরিকল্পনা রূপায়ণ করা হবে। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে আইআরসিটিসি’র গ্রুপ জেনারেল ম্যানেজার, ইস্ট জোন, দেবাশিস চন্দ্র বলেন, রান্না করা খাবার তুলে দেওয়া হবে আরপিএফ-এর হাতে। তারাই সেই খাবার বণ্টন করবে। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই হাওড়া, শিয়ালদহ সহ বিভিন্ন জায়গায় অত্যন্ত গরিব শ্রেণীর মানুষজনকে খাবার পরিবেশন করা শুরু হয়েছে রেল এর পক্ষ থেকে। রেল সূত্রের খবর, এই খাবার বণ্টনের গোটা পরিকল্পনায় প্রতিটি জোনের জেনারেল ম্যানেজার এবং প্রতিটি বিভাগের প্রধানদের যুক্ত থাকতে বলা হয়েছে। খাবার বণ্টনের সময় পরিছন্নতা এবং সোশ্যাল ডিস্টেন্স বা সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করতে বলা হয়েছে। প্রয়োজন পরলে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির থেকে স্বেচ্ছাসেবকদের এই কাজে যুক্ত করা যেতে পারে। খাবার বণ্টনের সময় আরপিএফ বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা নিতে হবে। তাদের মাস্ক পরতে হবে। স্যানিটাইজার দিয়ে ধুয়ে হাতে গ্লাভস পরতে হবে। খাবার বণ্টনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন গাড়ি সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলির জন্য আইআরসিটিসি এবং রেল সমন্বয় রেখে কাজ করবে। কীভাবে বেস কিচেন থেকে খাবার নিয়ে যাওয়া হবে, এবং তা বণ্টন করা হবে, সেই গোটা বিষয়টি নিয়ে একটি ‘এসওপি’ তৈরি করতে বলা হয়েছে। খাবার বণ্টনের পর সেই জায়গাটির পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং পড়ে থাকা সামগ্রী যাতে সঠিকভাবে সরিয়ে ফেলা হয়, তা দেখতে বলা হয়েছে। খাবার বণ্টনের জায়গায় মেডিক্যাল টিম রাখা যেতে পারে বলেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, আমাদের জোনে ইতিমধ্যেই রাঁচি, বালাসোর, খড়্গপুর এবং টাটানগর স্টেশনে গরিব মানুষকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, কেবলমাত্র রেলকর্মীদের জন্য আরও একটি নতুন সহায়তার ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। খড়্গপুরে এজন্য একটি কল সেন্টার খোলা হয়েছে। তাতে রেলকর্মীরা ফোন করলে বাড়িতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, আমাদের জোনের একাধিক জায়গায় ইতিমধ্যেই একেবারে গরিব মানুষজনকে আরপিএফ খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছে। এই জোনের আর এক কর্তা বলেন, আগামী দিনে আইআরসিটিসি খাবার পরিবেশনের ব্যাপারে যে পরিকল্পনা করবে, তাতে জোনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।