ব্যবসায়ে যুক্ত হলে এই মুহূর্তে খুব একটা ভালো যাবে না। প্রেম প্রণয়ে বাধা। কারও সাথে ... বিশদ
আট বছর আগে শেষবারের মতো গিটার হাতে নিয়েছিলেন বছর সাতাশের শৌণক সেন। এত বছর পর গৃহবন্দি বরানগরের এই আইটি ইঞ্জিনিয়ার ফের একবার নিজের পুরনো শখ ঝালাইয়ে ব্যস্ত। দীর্ঘদিন রেওয়াজ না করে গলাটা ধরেছে। কিন্তু তাতে কী! গিটার হাতে ফেসবুক লাইভে জীবনমুখী গান, গল্পে এই ‘অদ্ভুত’ অভিজ্ঞতা শোনাচ্ছেন তিনি।
বালির বছর পঁচিশের শুভদীপ সামন্ত ফেসবুকে আপলোড করেছেন এক্সারসাইজ-এর ভিডিও। জিম বন্ধ, তাই ডাম্বেল কিংবা লোহার রডের বদলে কখনও জলের ড্রাম, কখনও আবার ফাঁকা গ্যাস সিলিন্ডার তুলে ফেসবুক লাইভে শুভদীপের ‘ওয়ার্কআউট’ বাহবা কুড়চ্ছে। শুধু, শুভদীপই নন, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ বা মেসেঞ্জারের স্ট্যাটাসে শরীর সুস্থ রাখার ভিডিও আপলোড করে সময় কাটানোর নিদান দিচ্ছে জেন নেক্সটের একটা বড় অংশ।
মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কর্মরত গড়িয়াহেটের সর্বাণী সেনগুপ্ত বাড়িতে বসে অফিসের কাজের ফাঁকেই তাঁর রান্না করার শখ মেটাচ্ছেন। রান্না করতে করতেই ফেসবুক লাইভে দিচ্ছেন সময় কাটানোর নিদান।
সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে এমনই টুকরো-টুকরো ছবি কমবেশি সর্বত্র। এমনিতে বছরভর দৌড়ঝাঁপ, ইঁদুর দৌড়ে টিকে থাকার লড়াই। তার মাঝে হঠাৎ এই ছন্দপতন। ঘর কিংবা পরিবারকে সময় দিতে না পারা মানুষেরা এখন পরিবারে মগ্ন। অফুরন্ত সময়ে পরিজনের সঙ্গে আড্ডা-গানবাজনা। ফেসবুকে সেই ছবিও শেয়ার করছেন কেউ কেউ।
করোনা ভাইরাস থেকে পরিত্রাণের পথ একমাত্র লকডাউন। ‘স্টে হোম, সেফ হোম’ প্রোফাইল পিকচারে এই লোগো ট্যাগ করে সচেতনতা বার্তা ফেসবুকজুড়ে। ছোটবেলা থেকে বড়বেলার বিবর্তনের ছবির কোলাজে করে দিচ্ছেন কেউ। কোথাও আবার বন্ধুদের সঙ্গে ভিডিও কলের স্ক্রিন শট শেয়ার করে তা ফেসবুকে আপলোড করার ধুম লেগেছে। হোটেল, রেস্তরাঁ থেকে শুরু করে পানশালা— সব বন্ধ। ফাস্টফুড প্রিয় অনেকের কাছেই এখন বাড়ির খাবার বাধ্যতামূলক। হোম কোয়ারেন্টাইনে থেকে কেউ কেউ বেছে নিয়েছেন রান্না করার টাস্ক। ঝটপট আপলোড হচ্ছে ছবি-ভিডিও। বছরভর প্রতিযোগিতার দৌড়ে ঝাঁপানো প্রজন্ম এভাবেই ‘অকাজ’-এ খুঁজে পাচ্ছে সময় কাটানোর উপকরণ।
‘বোর’ হলেও বৃহত্তর স্বার্থে সবটা মানিয়ে নিয়ে সতর্কতার বার্তা দিচ্ছে আগামী প্রজন্ম। হঠাৎ স্তদ্ধ হয়ে থাকা দিনগুলিতে তাই সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে বেঁচে থাকার উৎসব।