রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর, নতুন আক্রান্তের মধ্যে দু’জন আশঙ্কাজনক অবস্থায় শহরের পিয়ারলেস হাসপাতালে ভর্তি থাকা করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধের আত্মীয়া। বয়স যথাক্রমে ৫৬ ও ৭৬। প্রথমজনের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার দীঘামোড়ে। অন্যজনের কলকাতায়। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগে নয়াবাদের বাসিন্দা ওই ৬৬ বছরের বৃদ্ধ এগরায় নিজের আত্মীয় এক চিকিৎসকের বিয়েবাড়িতে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁর সংস্পর্শে আসেন এই দু’জন। ৫৬ বছর বয়সি মহিলা ওই চিকিৎসকের স্ত্রী। অন্যজন চিকিৎসকের পিসিমা। পিয়ারলেসে ভর্তি বৃদ্ধের রিপোর্ট করোনা পজিটিভ হওয়ায় ওই দু’জনসহ ১৩ জনকে এগরা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে এসেছিল জেলা প্রশাসন। আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে প্রত্যেকের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় নাইসেড ও বিভিন্ন করোনা টেস্টিং সেন্টারে। ১১ জনের নমুনা নেগেটিভ আসে। রাতে আসা রিপোর্টে করোনা মেলে এই দুই বয়স্কার। তাঁদের কলকাতায় আনা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর, পিয়ারলেসে ভর্তি করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধের শারীরিক অবস্থার বেশ কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তীব্র শ্বাসকষ্টের জন্য বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখতে হয়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সুপারিশ মেনে ভর্তি থাকাকালীন তাঁকে হাইড্রোক্লোরোকুইন দেওয়া হয়। পাশাপাশি উপসর্গভিত্তিক অন্যান্য ওষুধ ও অটো ইমিউন আর্থরাইটিসের জন্য প্রচলিত একটি ওষুধ দেওয়া হয়েছে। বাংলায় গুরুতর অসুস্থ করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় এই প্রথমবার শেষোক্ত ওষুধটির ব্যবহার হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। যদিও চীনে ইতিমধ্যেই সেটি একাধিকবার করোনা রোগীদের উপর ব্যবহৃত হয়েছে এবং এইচআইভি মোকাবিলার ওষুধের সঙ্গে এটি ব্যবহার করে একাধিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালও চলছে। রাতে পিয়ারলেসের চিফ এগজিকিউটিভ ডাঃ সুদীপ্ত মিত্র বলেন, ওষুধটি শুক্রবার থেকে দেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কাজ হচ্ছে তাতে।
এদিকে শনিবার স্বাস্থ্যভবনে প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠকের পর সরকারকে করোনা মোকাবিলায় ছয় দফা পরামর্শ দিল রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্স। সেগুলি হল, উপযুক্ত পদ্ধতি মেনে জীবাণুমুক্ত করে মাস্ক-এর পুনর্ব্যবহার। দুই, থুতু পরীক্ষা ছাড়াও সুনির্দিষ্ট রক্তপরীক্ষার মাধ্যমে করোনা নির্ণয়। তিন, অন্তত রাজ্যের ১৫টি জায়গায় করোনা পরীক্ষাকেন্দ্রের ব্যবস্থা করা। চার, মেডিক্যাল কলেজ যেমন করোনা হাসপাতাল হচ্ছে, তেমনই নিউটাউন ছাড়াও আরও একটি বড় কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরি করা। পাঁচ, করোনা চিকিৎসায় যুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের সংক্রমণ রুখতে আগাম হাইড্রোক্লোরোকুইন দেওয়া।
একটি কেন্দ্রীয় সরকারি এবং রাজ্য সরকারের কয়েকটি করোনা টেস্টিং সেন্টার চালু হওয়ার পর এবার এই পরীক্ষা চালু হতে যাচ্ছে কলকাতাস্থিত সেনাবাহিনীর কমান্ড হাসপাতালে। এতদিন সেখানে করোনা পরীক্ষার কিট ছিল। কিন্তু পিসিআর মেশিন ছিল না। এবার সেটি হাসপাতালকে দিল কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থা যাদবপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজি। এখন শুধু অপেক্ষা আইসিএমআর-এর সবুজ সঙ্কেতের। তা মিললেই করোনা পরীক্ষা শুরু হবে। বর্তমানে প্রায় ৫০০টি কিট হাসপাতালের হাতে পৌঁছেছে। কল্যাণীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়ো-মেডিক্যাল জিনোমিক্স-এ করোনা পরীক্ষার পিসিআর যন্ত্র রয়েছে। সেখানেও ল্যাব চালু করার ভাবনাচিন্তা চলছে।