বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
রয়্যাল উলভারহাম্পটন এনএইচএস ট্রাস্ট-এর সিনিয়র ক্লিনিক্যাল ফেলো ডাঃ বৈদ্যনাথ ঘোষদস্তিদার জানাচ্ছেন, দুশ্চিন্তা বাঁধনহারা হওয়ার লক্ষণ হল—নিজের ও প্রিয়জনের স্বাস্থ্য নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত চিন্তা রাতে ঘুম না হওয়া খাওয়ায় অনীহা। কেউ বেশি খান, কেউ কম। খাওয়ার সময়ের ঠিক থাকে না। কোনও কাজে মনোনিবেশ করা কঠিন হয়ে পড়ে। ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসারের মতো রোগের প্রকোপ বাড়ে।
ডাঃ দস্তিদার জানাচ্ছেন, মানসিকভাবে দুর্বল হওয়া চলবে না। স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারীদের জন্য তাঁর পরামর্শ, মানসিক সমস্যায় মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। চিকিৎসক, নার্স, সাধারণ স্বাস্থ্যকর্মীরা বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলুন। সঙ্গে বই রাখুন, সময় পেলে পড়ুন। অতি অবশ্য ব্যায়াম করুন। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ জয়রঞ্জন রাম বলছেন, এই অবস্থায় আমজনতার চিন্তা মোটেই অস্বাভাবিক নয়। অনেকের বাড়িতেই পরিচারিকা, আয়া আসছেন না। অনেকের রুজি, রোজগার, চাকরির চিন্তা হচ্ছে। চিন্তা হবেই। তবে দুশ্চিন্তায় আচ্ছন্ন হওয়ার আগে উদ্ভূত পরিস্থিতিকে স্বীকার করে নিন। সরকার যখন ‘লকডাউন’ করার মতো ব্যবস্থা নিচ্ছে, নিশ্চয় কারণও রয়েছে।
মনে রাখবেন, ঘরে থাকা ও সরকারি নির্দেশ মেনে চলা মানে নিজের, পরিবারের ও সমাজের কল্যাণ করা। অন্তত এভাবে নিজেকে উৎসাহ দিন। সারাদিন ধরে কোভিড-১৯ নিয়ে খবর দেখা বন্ধ করুন। সর্বক্ষণ সোশ্যাল মিডিয়ায় কাটাবেন না। সেখানে নানা গুজব ছড়ায়, যা এক লাফে আপনাকে আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলতে পারে। বরং পরিজনদের সঙ্গে কথা বলুন। বাড়ির কাজে হাত লাগান। অ্যালকোহল পান করবেন না। নেশা হোক বই পড়ার।
কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের মনোরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ শর্মিলা সরকার বলছেন, মানসিক রোগের সমস্যায় আক্রান্তরা ডাক্তারবাবুর কাছে যেতে না পারলে পুরনো প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ খান। প্রয়োজন হলে ডাক্তারবাবুকে ফোন করেও পরামর্শ নিন। বাচ্চারা ঘরবন্দি থাকাকালীন অস্থির হয়ে পড়বে, স্বাভাবিক। ওদের সঙ্গে কথা বলুন। নিয়ম মেনে চলতে বলুন। সবকিছু নিয়ে কড়া শাসন করবেন না। কার্টুন দেখতে চাইলে মাঝেমধ্যে দেখতে দিন। কতটুকু পড়বে, কতটুকু টেলিভিশন দেখবে তা নিয়ে রুটিন করে ফেলুন। অনলাইনেও শিক্ষাদানের ওয়েবসাইট, চ্যানেল রয়েছে। আর হ্যাঁ, নিয়মিত এক্সারসাইজ করার ব্যাপারে ওদের উৎসাহ দিন।