নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বঙ্গ বিজেপি’র নয়া রাজ্য কমিটি গঠন ঘিরে দলীয় স্তরে চূড়ান্ত মতানৈক্য সামনে আসছে। দিলীপ ঘোষের নতুন ‘টিম’-এ কারা জায়গা পাবেন, তা নিয়ে চলছে লবিবাজি। পূর্ণাঙ্গ রাজ্য কমিটি ঘোষণার দিনক্ষণ ক্রমেই পিছিয়ে যাওয়ার ঘটনা থেকে স্পষ্ট, রাজ্য নেতৃত্ব এ নিয়ে দোলাচলে রয়েছে। গত ১৬ জানুয়ারি দিলীপ ঘোষ দ্বিতীয় দফায় তিন বছরের জন্য ফের রাজ্য বিজেপি সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। এরপর একমাসের বেশি সময় কেটে গেলেও রাজ্য কমিটি না তৈরি হওয়ার ঘটনা বেনজির বলেই মনে করছে গেরুয়া শিবিরের প্রবীণ নেতাদের একাংশ। তাঁদের দাবি, তৃণমূল-কংগ্রেস-বামফ্রন্ট থেকে আসা নেতারা নিজের মতো ‘লবি’ করে রাজ্য কমিটিতে জায়গা করে নিতে সক্রিয়। আসন্ন পুরসভা ভোটের দিকে নজর না দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার লড়াইতেই ব্যস্ত থাকছেন রাজ্য নেতাদের অধিকাংশ। ফলে স্থানীয় সরকার গঠনের লড়াইয়ে আমরা নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে ক্রমেই পিছিয়ে যাচ্ছি। ওই নেতাদের দাবি, সর্বসম্মতভাবে রাজ্য কমিটির পূর্ণাঙ্গ খসড়া তালিকা দিল্লিতেও পাঠানো যায়নি। প্রসঙ্গত, এই কমিটি ঘোষণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুমোদন দরকার হয়। এক্ষেত্রে আগামী ১ মার্চ প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ এবং বর্তমান সভাপতি জে পি নাড্ডার কলকাতা সফরে রাজ্য কমিটি নিয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে বিজেপি নেতাদের মত।
এদিকে, দলের অপর একটি অংশের দাবি, সম্প্রতি বিজেপি এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ক্রমেই প্রকট হয়ে উঠছে। ভিন দল থেকে আসা নেতা-কর্মীরা পার্টি লাইনের বাইরে গিয়ে বহু কাজ করছেন। যা দলের এবং সঙ্ঘের ভাবমূর্তিতে আঘাত দিচ্ছে বলেও মত ৬ মুরলীধর সেন লেনের ওই নেতাদের। তাঁদের কথায়, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে আশাতীত সাফল্য পেয়ে বহু কর্মী-নেতার মাথা ঘুরে গিয়েছে। অনেকে ভেবেই নিয়েছেন, ২০২১ সালে বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় আসছে। কিন্তু এই রাস্তা যে কত কঠিন, তা উপলব্ধি করা যাবে আসন্ন পুরসভা ভোটে। রাজ্যের এক প্রভাবশালী আরএসএস নেতার কথায়, আমরা মোটেও বিজেপির দৈনন্দিন কাজকর্মের মধ্যে মাথা গলাই না। কিন্তু রাজ্যস্তরে সামগ্রিকভাবে আমাদের লাইন কী হবে, তার একটা রূপরেখা তৈরি করে দেওয়া হয়। বিজেপির বহু নেতাই তার বাইরে গিয়ে কাজ করছেন বলে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি যথাস্থানে ঠিক সময়ে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।