কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
হুগলির পোলবায় পুলকার দুর্ঘটনার জেরে গুরুতর জখম ঋষভ সিং শনিবার ভোরে এসএসকেএম হাসপাতালে মারা গিয়েছে। ছোট্ট ঋষভের মৃত্যু স্কুলগাড়ি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিল। পরিবহণ দপ্তরের কর্তারা বলছেন, আইন ভেঙে কোনও পুলকার বা স্কুলবাস রাস্তায় চললে মোটর ভেহিকেলস আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিসের পাশাপাশি মোটর ভেহিকেলস ইন্সপেক্টররাও (এমভিআই) রাস্তায় নেমে বিশেষ অভিযান চালাবেন। ইতিমধ্যেই মালিক সংগঠনগুলিকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু, স্কুলগাড়ির বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে অভিযান কতটা সফল হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে প্রশাসনের অন্দরেই। কয়েকমাস আগের ঘটনা। গত ১৩ নভেম্বর পার্ক সার্কাস চত্বরে স্কুলগাড়ির কাগজপত্র যাচাই করা হচ্ছিল। সেই সময়ে এমভিআই’রা একাধিক পুলকারকে ধরে। সেইসব গাড়ির রোড ট্যাক্স ও ফিটনেসের কাগজপত্র ঠিক ছিল না। কিন্তু, অভিভাবকদের বিক্ষোভের জন্য দু’টি ছাড়া বাকি বাকি গাড়িগুলিকে ছেড়ে দিতে হয় সেদিনই! স্কুলগাড়ির বিরুদ্ধে অভিযানে এমন ঘটনা নতুন নয় বলেই খবর। এর সঙ্গে আরও একটি বিষয় রয়েছে। কয়েক বছর আগে পরপর স্কুলগাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ায় অভিযান শুরু করেছিল রাজ্য। অভিযান শুরু হতেই ধরা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রাস্তায় গাড়ি নামানো বন্ধ করে দেয় মালিকরা। ফলে রাস্তায় ব্যাপক হারে কমে যায় স্কুলগাড়ির সংখ্যা। আর তাতেই রে রে করে ওঠেন অভিভাবকরা। আরও একটি বিষয় রয়েছে। ব্যক্তিগত গাড়িকে পুলকার হিসেবে ব্যবহার বেআইনি। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, এই ধরনের ক্ষেত্রে অভিভাবকরা বলেছেন, পুলকার নয়, নিজেদের ব্যক্তিগত গাড়িতেই কয়েকজন পড়ুয়া একসঙ্গে যাতায়াত করে। তাই, নতুন করে স্কুলগাড়ি নিয়ে অভিযান শুরুর আগে এই বিষয়গুলিকে মাথায় রাখছেন প্রশাসনিক কর্তারা।
তাঁদের আর্জি, স্কুলগাড়ি নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং অভিভাবকদের আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। ‘এম পরিবহণ’ নামের একটি ওয়েবসাইট ও অ্যাপ চালু হয়েছে। সেখান থেকে গাড়ির সমস্ত কাগজপত্র ঠিক রয়েছে কি না, তা দেখে নেওয়া যায়। দরকারে দপ্তরেও যোগাযোগ করা যেতে পারে।
পরিবহণ দপ্তরের এক কর্তার কথায়, আমরাও চাই না, রাস্তায় পড়ুয়ারা কোনও সমস্যায় পড়ুক। সেই কারণেই মালিকদের ডেকে আলোচনা করে আইন মেনে পরিষেবা দেওয়ার কথা ফের বলা হয়েছে। অনেক সময় দেখা যায়, সার্টিফিকেট অব ফিটনেস (সিএফ) করানোর সময়ে গাড়িকে সাজিয়ে গুছিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সিএফ পর্ব মিটলেই ফের পুরনো যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়। এসব ক্ষেত্রেও কড়া পদক্ষেপ করা হবে। মালিক সংগঠনগুলির নেতাদের সেকথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে এসবের মধ্যেও একটি ইতিবাচক দিক রয়েছে। সেটি হল, সম্প্রতি সিএফ এবং রোড ট্যাক্স বকেয়া থাকায় শহরের ১৫৩টি স্কুলের ৮৩৭টি বাসের জন্য নোটিস ইস্যু করা হয়েছিল। বর্তমানে সেইসব বাসের বকেয়া সিএফ মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। রোড ট্যাক্সও অনেকেই মিটিয়ে দিচ্ছে। দপ্তরের এক কর্তার কথায়, চলতি মাসের মধ্যে এই কাজটি সারতেই হবে। মাধ্যমিক পরীক্ষা মিটলে রাস্তায় নেমে গোটা পরিস্থিতি যাচাই করা হবে।