গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
রাজ্যের সামগ্রিক উন্নয়নের সুবাদে পুর এলাকার ছবি অনেকটাই বদলেছে। তাকে হাতিয়ার করেই আসন্ন ভোটে নামতে চাইছে তৃণমূল। সিএএ, এনআরসি এবং এনপিআর বিরোধিতায় কংগ্রেস ও বামেদের সঙ্গে তৃণমূলের অবস্থান অভিন্ন। তবে, বিজেপির পাশাপাশি রাজ্যের শাসক তৃণমূলের বিরোধিতায় জোট বাঁধতে তৎপর হয়ে উঠেছে কংগ্রেস ও বাম। জোটের প্রধান প্রতিপক্ষ কে, তৃণমূল নাকি বিজেপি? এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়েই খেই হারাচ্ছেন দুই শিবিরের নেতারা। যার ফলে, জোট গড়লেও পুর ভোটে প্রার্থী হওয়ার উৎসাহে ভাটা চলেছে। ইতিমধ্যেই প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে আসন রফা নিয়ে বামেদের সঙ্গে আলোচনার জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি গড়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে সিংহভাগের না আছে সাংগঠনিক শক্তি, না আছে কোনও জনপ্রিয় মুখ। তাঁদের এক প্রতিনিধির কথায়, তাঁরা হন্যে হয়ে বিভিন্ন পুর ওয়ার্ডের সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম খুঁজছেন। তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন, জেতার সম্ভাবনা না থাকায় প্রার্থী হওয়ার আগ্রহই নেই। এই অবস্থায় বস্তুত নিজেদের মানরক্ষায় নাম খুঁজে বেড়াচ্ছেন কংগ্রেস নেতারা। এর মধ্যে গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো গোষ্ঠীবাজি মাথাচাড়া দিচ্ছে আসন্ন পুরভোটকে কেন্দ্র করে। যার শিকার হয়েছে যুব কংগ্রেস। রাজ্য যুব কংগ্রেসের সাংগঠনিক নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থীদের দলের বিভিন্ন পদে বসানোয় ঘরোয়া বিবাদ বাড়ছে। প্রদেশ নেতৃত্বের মদতে তাঁরাই ছড়ি ঘোরাতে শুরু করছেন প্রার্থী বাছাইয়ে। এর ফলে আরেক গোষ্ঠী ক্রমে উৎসাহ হারিয়ে বসে যাচ্ছে।
কোন ফর্মুলায় আসন বন্টন, এই নিয়ে আলোচনা শুরু হলেও ক’টি আসনে জোট লড়াই করবে তা নিয়ে সংশয় কাটার লক্ষণ নেই। প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার মতে, বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধী হিসেবে আন্দোলন করলেও মানুষের কাছে তৃণমূলের প্রতিপক্ষ শক্তি হিসেবে কংগ্রেস বা বামপন্থীদের থেকে বিজেপি অনেক বেশি গ্রহণীয়। উল্লেখ্য, বিগত লোকসভা ভোটে বিজেপির অভূতপূর্ব ভোটবৃদ্ধির নেপথ্যে বাম ও কংগ্রেসের সমর্থনে ব্যাপক ধসকেই দায়ী করেছে সংশ্লিষ্ট মহল। তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বামেদের ভোট বিজেপির ঝুলিতে ট্রান্সফার করার অভিযোগ তুলেছেন। একদিকে কংগ্রেসের অন্তর্কলহ, অন্যদিকে বামেদের সাংগঠনিক সঙ্কট। দুইয়ে মিলে পুরভোটে তৃতীয় পরিসর ক্রমে সংকুচিত হচ্ছে। অবাধে ভোট হলে তবেই মানুষের মনোভাব বোঝা যাবে। সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য এই যুক্তি হাজির করলেও জোট করে আখেরে তাদের লাভ হবে কি না, তার সদুত্তর দিতে পারেননি। উদ্ভূত পরিস্থিতির সুবাদে বিজেপি-তৃণমূল রাজনৈতিক মেরুকরণ আরও ঘনীভূত হতে চলেছে। একথা অস্বীকার করতে পারছেন না বাম বা কংগ্রেস নেতারাও। অর্থাৎ সিএএ, এনআরসি বা এনপিআর নিয়ে বাম ও কংগ্রেস যতই প্রতিবাদে সক্রিয় হোক না কেন, তা নিয়ে বিজেপির বিশেষ মাথাব্যথা নেই। ভোটের ময়দানে সিএএ-কে কেন্দ্র করে লড়াই হলে বিজেপিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে তৃণমূলই। পদ্ম ও ঘাসফুলের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃতীয় পক্ষ বস্তুত অপ্রাসঙ্গিক হতে চলেছে বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা।