বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
মালদহের জাল নোট কারবারিদের সঙ্গে বিহার ও ঝাড়খণ্ডের অস্ত্র ব্যবসায়ীদের যোগাযোগের বিষয়ে অনেকদিন ধরেই তথ্য আসছিল এসটিএফের অফিসারদের কাছে। আসলে একের পর এক ব্যক্তি ধরা পড়ে যাওয়ায় বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারিদের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে মালদহে জাল নোটের কারবারে জড়িতরা। তাদের এজেন্টরাই নকল নোট নিয়ে যাচ্ছে বিহার বা ঝড়খণ্ডে। জাল নোটের মামলায় ধৃত কয়েকজনকে জেরা করে সওকত আনসারি ও মহম্মদ পারভেজ নামে দুই ব্যক্তির নাম জানতে পারেন অফিসাররা। খোঁজ করতে গিয়ে দেখা যায়, তারা ঝাড়খণ্ডে অস্ত্র ব্যবসায় জড়িত। রীতিমতো কারখানা খুলে সেখানে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করছে তারা। অফিসাররা জানতে পারেন, কলকাতার এক ব্যক্তির হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ও জাল নোট তুলে দিতে মঙ্গলবার কলকাতায় আসছে। পুলিসি ধরপাকড়ের হাত থেকে বাঁচতে বাইক করে তারা আসবে। সেইমতো নজরদারি শুরু হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ধর্মতলা এলাকায় তারা আসামাত্র আটক করা হয়। তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় এক লক্ষ টাকার জাল নোট ও দুটি বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র।
জেরায় ধৃতরা পুলিসকে জানিয়েছে, বিহার ও ঝাড়খণ্ডের বেশ কয়েকজন আগ্নেয়াস্ত্র কারবারি এখন নকল নোটের ব্যবসা চালাচ্ছে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, যে ব্যক্তির আগ্নেয়াস্ত্র কেনার কথা, তার হাতেই দেওয়া হবে মোটা অঙ্কের জাল নোট। সংশ্লিষ্ট রাজ্যে কোথায় ও কার হাতে তা দিতে হবে, বলে দেওয়া হচ্ছে। সেইমতো সেখানকার বড় এজেন্টের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে নকল টাকা। এভাবেই হাতবদল ঘটানো হচ্ছে। আগ্নেয়াস্ত্রের পেমেন্ট অবশ্য আসল টাকাতেই নেওয়া হচ্ছে। এই টাকার একটা বড় অংশ বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারিরা মালদহে জাল নোটের মাথাদের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছে। তা দিয়েই বাংলাদেশ থেকে কেনা হচ্ছে জাল টাকা। এরপর মালদহের ব্যবসায়ীরা ঝাড়খণ্ড ও বিহারে গিয়ে এই টাকা পৌঁছে দিয়ে আসছে। এতে জাল নোট বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ আরও সহজ হয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে। তবে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারিরা যেভাবে জাল নোটের কারবারে জড়িয়ে পড়েছে, তা রীতিমতো উদ্বেগের বলেই মনে করছেন অফিসাররা। এমনকী ধৃতরা এও জানিয়েছে, পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে যাওয়ার ক্ষেত্রে তারা এখন বাইক ব্যবহার করছে। তাতে ভুয়ো নম্বর প্লেট লাগানো থাকছে। ট্রেন বা বাসে তল্লাশির মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এই কৌশল নিয়েছে তারা। একমাত্র দক্ষিণ ভারত বা অন্য কোথাও যাওয়ার ক্ষেত্রে ট্রেন রুটকে ব্যবহার করা হচ্ছে।