রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
মোহনবাগান ক্লাবের এক প্রাক্তন কর্মকর্তার পুত্রবধূর নাম এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে। মামলার বয়ান অনুযায়ী, নিয়মিত জিম করা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী এবং সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার জুনিয়র মৃধা এক মহিলার সঙ্গে বিশেষ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। বেশ কিছুদিন পরে তিনি জানতে পারেন, ওই নারী বিবাহিত ও এক সন্তানের মা। সেইসূত্রে ওই সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। এই প্রেক্ষাপটে বেলঘরিয়ার বাড়ি থেকে ২০১১ সালের ১২ জুলাই রাত ন’টা নাগাদ তিনি মোটরবাইক নিয়ে সেই নারীর সল্টলেকের বাড়ি দিকে রওনা দেন। তার আগে তিনি একটি ফোন পেয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে তাঁর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। বেলঘরিয়া থানা ঘটনাটিকে স্রেফ মোটরবাইক দুর্ঘটনা বলে তাঁর বাড়িতে জানায়। কিন্তু, মৃতের পিতা সমরেশ ছেলের দেহ পর্যবেক্ষণ করে পুলিসকে বলেন, দেহে গুলির চিহ্ন রয়েছে। তার জেরে ১৩ জুলাই হত্যার অভিযোগে এফআইআর দায়ের হলেও পুলিসি তদন্ত সম্পর্কে প্রশ্ন উঠে যায়। সেইসূত্রে সিআইডি’র হাতে তদন্তভার গেলেও লাভ হয়নি। মৃতের বিক্ষুব্ধ পরিবার মুখ্যমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেয়। তাতেও কাজ না হওয়ায় তাঁরা ২০১৩ সালে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
মূল মামলায় মৃতের পরিবারের আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় ও দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নগুলি ছিল, অভিযুক্ত খুনী কে, তা উল্লেখ না করে আইন অনুযায়ী চার্জশিট দাখিল করা যায় না। দ্বিতীয়ত, জুনিয়রের বাইকের পিছনে সেদিন একজন ছিল। কারণ, গুলিটি তাঁর পিঠের দিক থেকে ঢুকে শরীরের নীচের দিকে আটকে ছিল। যা পিছন দিকে থাকা ব্যক্তির পক্ষেই সম্ভব। অথচ, সেই ব্যক্তির খোঁজ মেলেনি। কেন সিসি ক্যামেরার সব ছবি পাওয়া গেল না? ঘটনার দিন জুনিয়রের সঙ্গে প্রিয়াঙ্কা ওরফে মুনমুন চৌধুরী নামে সেই মহিলার মোবাইল ফোনে অন্তত ২১ বার কথা হয়েছিল। পলিগ্রাফ টেস্টে ওই মহিলা ও তাঁর স্বামীর বক্তব্য সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। তা সত্ত্বেও তাঁদের জেরা কেন করা হয়নি? ঠিক এই কারণেই মৃতের পরিবার বারবার বলছেন, এক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাবশালীর হস্তক্ষেপেই সঠিক তদন্ত হচ্ছে না। তার আরও একটি কারণ হল, এই মামলার তদন্তকারী অফিসারকে চারবার বদল করা হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় গত বছরের ১৭ মে দেওয়া রায়ে সিআইডি তদন্ত প্রক্রিয়াকে ‘ভাসা-ভাসা’ বলে উল্লেখ করে সিবিআই-এর যুগ্ম অধিকর্তাকে নির্দেশ দেন, ন্যূনতম পুলিস সুপার মর্যাদার অফিসারকে দিয়ে এই ঘটনার তদন্ত করাতে হবে। ছয় মাসের মধ্যে। আর রায় হাতে পাওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য সিআইডি তুলে দেবে সিবিআই-এর হাতে। সেই নির্দেশ চৌধুরী পরিবারের তরফে চ্যালেঞ্জ করে বলা হয়, সিআইডি তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তকে ‘ক্লিনচিট’ দিয়েছে। পরিবারটির সামাজিক মানসম্মান আছে। তাছাড়া সিবিআই তদন্ত শুরু করে অভিযুক্ত মহিলার একটি পুরনো ডায়েরি বাজেয়াপ্ত করেছে। কিন্তু, তার কারণ জানা যায়নি। এই অবস্থায় ওই সিবিআই তদন্ত প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হোক। যে আবেদনে বেঞ্চ সাড়া দেয়নি।